রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

দৈনিক নতুন পয়গাম

দৈনিক নতুন পয়গাম
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

সত্যের খবর আনতে,
এসেছে নতুন পত্র।
মিথ্যার আঁধার হটিয়ে,
দেখাতে আলোর চিত্র।

পয়গাম সদা দুঃখ লিখে,
দেয় সে ন্যায়ের ডাক।
সে ডাকে জাগবেই মানুষ,
নেই হওয়ার অবাক।

শান্তির বাণী বুকে,
ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ছড়াতে।
দৈনিক নতুন পয়গাম,
থাকবে আলোর পথে।। 

https://notunpoigam.com/poetry-daily-notun-poigam/ 

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫

ভেঙে দাও ভেদরেখা

কবিতা: ভেঙে দাও ভেদরেখা
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 


কে উঁচু, কে বা নিচু,
বলো তো কোন নিয়মে?
 স্রষ্টার কাছে সবাই সমান
অধিকারেই জন্মে।

ভেদাভেদে জ্বলছে ধরণী,
বাড়ছে ঘৃণা–হিংসা,
জাতের নামে বাড়ছে কেবলই
অন্যায়েরই নেশা।

তাই ভেঙে দাও সব ভেদরেখা 
সত্য নীতি মেনে,
নিরব নয়, প্রকাশ করো
সাহস রাখো মনে।

জাত নয়, ধর্ম নয়,
মানুষ সবার আগে,
ভালোবাসায় ভরুক পৃথিবী,
সত্য উঠুক জেগে ।।
---

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি সমাজে প্রচলিত জাতপাত, ভেদাভেদ ও বিভেদনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি মানুষকে জাগাতে চান যাতে সবাই মানবতার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়।

প্রথম স্তবক:
“কে উঁচু, কে বা নিচু, বলো তো কোন নিয়মে?
স্রষ্টার কাছে সবাই সমান অধিকারে জন্মে।”
👉 এখানে কবি বলছেন—কেউ জন্মগতভাবে বড় বা ছোট নয়। স্রষ্টার দৃষ্টিতে সবাই সমান অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। উচ্চ–নীচ বৈষম্য আসলে মানুষের বানানো।

দ্বিতীয় স্তবক:
“ভেদাভেদে জ্বলছে ধরণী, বাড়ছে ঘৃণা–হিংসা,
জাতের নামে বাড়ছে কেবলই অন্যায়েরই নেশা।”
👉 ভেদাভেদ সমাজকে অশান্ত করছে। জাতপাত, বর্ণভেদ, ধর্মভেদে মানুষে মানুষে হিংসা, ঘৃণা ও অন্যায় বাড়ছে, যেন তা এক নেশায় পরিণত হয়েছে।

তৃতীয় স্তবক:
“তাই ভেঙে দাও সব ভেদরেখা সত্য নীতি মেনে,
নিরব নয়, প্রকাশ করো সাহস রাখো মনে।”
👉 কবি আহ্বান করছেন—সত্য ও ন্যায়ের পথে দাঁড়াতে হবে। চুপ করে থাকলে চলবে না, সাহস নিয়ে ভেদাভেদ ভাঙতে হবে।

চতুর্থ স্তবক:
“জাত নয়, ধর্ম নয়, মানুষ সবার আগে,
ভালোবাসায় ভরুক পৃথিবী, সত্য উঠুক জেগে।”
👉 কবিতার মূল বার্তা: মানুষের পরিচয় আগে, জাত বা ধর্ম নয়। যদি ভালোবাসা ও মানবতা প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে সত্য উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং পৃথিবী শান্ত হবে।
---
👉 সারকথা: কবিতাটি হলো মানবতা, ভালোবাসা ও সাহসের ডাক—যাতে জাত-ধর্মের ভেদাভেদ ভেঙে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়া যায়।

শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

জেগেছে জাতি

জেগেছে জাতি
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

জেগেছে জাতি, আনতে সুদিন,
জেগেছে মুক্তির তরে,
অত্যাচারের শৃঙ্খল ভেঙে
দাঁড়ায় দৃপ্ত ভরে।

জেগেছে জাতি, সত্যের ডাকে,
মিথ্যার বিরুদ্ধে সংগ্রাম,
আত্মত্যাগে গড়বে আগামী,
তাই করে যায় পরিশ্রম।

জেগেছে জাতি, হাতে হাত রেখে,
গড়ছে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন,
সোনার স্বদেশ উঠবে জেগে,
ফুটবে মিলনের মিলন।

জেগেছে জাতি, অদম্য শপথ,
ন্যায় যেখানে সাথি,
শান্তির স্বপ্ন হবে পূর্ণ,
আমরাই গড়বো খ্যাতি।। 

---

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি জাতিকে এক নতুন জাগরণের বার্তা দিয়েছেন। অত্যাচার–অন্যায়, মিথ্যা–অবিচারের বিরুদ্ধে জাতি জেগে উঠেছে এবং একদিন তারা শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও স্বাধীনতার সমাজ গড়ে তুলবে।

প্রথম স্তবক:
“জেগেছে জাতি, আনতে সুদিন, জেগেছে মুক্তির তরে, অত্যাচারের শৃঙ্খল ভেঙে দাঁড়ায় দৃপ্ত ভরে।”
👉 কবি বলছেন—অত্যাচার, শোষণ ও দুঃশাসনের শৃঙ্খল ভেঙে জাতি আজ জেগে উঠেছে। তারা নতুন দিনের, মুক্তির সুদিনের প্রত্যাশায় দৃপ্ত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“জেগেছে জাতি, সত্যের ডাকে, মিথ্যার বিরুদ্ধে সংগ্রাম, আত্মত্যাগে গড়বে আগামী, তাই করে যায় পরিশ্রম।”
👉 জাতি এখন সত্যের পথে। মিথ্যার বিরুদ্ধে তারা সংগ্রামে নেমেছে। নিজেদের আত্মত্যাগ ও শ্রমের মাধ্যমেই তারা এক সুন্দর আগামীর ভিত্তি গড়ে তুলবে।

তৃতীয় স্তবক:
“জেগেছে জাতি, হাতে হাত রেখে, গড়ছে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, সোনার স্বদেশ উঠবে জেগে, ফুটবে মিলনের মিলন।”
👉 একতা ও ভ্রাতৃত্বের হাত ধরে জাতি একত্রিত হচ্ছে। এর ফলে একটি সোনার স্বদেশ গড়ে উঠবে, যেখানে মিলন ও শান্তির ফুল ফুটবে।

চতুর্থ স্তবক:
“জেগেছে জাতি, অদম্য শপথ, ন্যায় যেখানে সাথি, শান্তির স্বপ্ন হবে পূর্ণ, আমরাই গড়বো খ্যাতি।।
👉 জাতির শপথ—ন্যায় হবে তাদের সাথি। এই শপথই পূর্ণ করবে শান্তির স্বপ্ন, আর তার মাধ্যমেই জাতি বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করবে।
---
👉 সারকথা: কবিতাটি একটি প্রতিবাদী ও প্রেরণামূলক আহ্বান—অত্যাচারের শৃঙ্খল ভেঙে সত্য, ন্যায়, ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির স্বপ্নে জাতির নতুন জাগরণ।

শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

গান: আবারো শান্ত হবে

গান: আবারো শান্ত হবে 
গীতিকার: তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

আবারো শান্ত হবে এই দুনিয়া
তোমার আমার অজানাতে,
শেষ হবে সব হিংসা-বিদ্বেষ
মানবতার হাত ধরাতে।

রবে না অত্যাচারী,
রবে না হিংসুকেরা,
রবে শুধু দিকে দিকে
ন্যায়পরায়ণ ওই ভাইয়েরা।
শেষ হবে সব দুঃখ কষ্ট,
থাকবে সবাই শান্তিতে।
আবারো শান্ত হবে............

মুছে যাবে কালো ছায়া
দিগন্ত যাবে ভরে,
শান্তির সুর বাজবে তখন
মানবতার ওই দুয়ারে।
আবারো শান্ত হবে
শান্তির রঙিন স্মৃতিতে।
আবারো শান্ত হবে............।।

মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

ভালো কাজে মন দাও ভাই

ভালো কাজে মন দাও ভাই 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর 24 পরগনা) 

ভালো কাজে মন দাও ভাই
থাকো মন্দ থেকে দূরে,
তুমি সত্য পথে চলে দেখো
জীবন ভরবে নূরে নূরে ।

মিথ্যার ছায়া দাও ছেড়ে দাও
লোভের জালে পা দিও না,
রাখো আল্লাহ তায়ালার ভয়ে হৃদয়
কখনো অন্যায় করো না।
ভালো দিয়ে সাজাও জীবন..
আর চলো না অন্ধকারে। 
তুমি সত্য পথে চলে দেখো
জীবন ভরবে নূরে নূরে ।
ভালো কাজে...............

ডাকো সবার আলোর পথে,
শিক্ষা ছড়াও ঘরে ঘরে,
জয় করো মন ভালোবাসা
ছড়াও সব মানুষের অন্তরে ।
ত্যাগ করো ভাই হিংসা বিদ্বেষ..
জীবন সাজাও মন ভরে। 
তুমি সত্য পথে চলে দেখো
জীবন ভরবে নূরে নূরে ।
ভালো কাজে....................।।

সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

মুহাম্মদকে জানো

মুহাম্মদকে জানো 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর 24 পরগনা) 

মুহাম্মদকে জানো সবাই,
তাঁরই পথে চলো,
সত্য-ন্যায়ের আলো দিয়ে
দুনিয়া করো ভলো।

ঝড়-তুফানে থেমো না ভাই,
রবের ভরসা করো, 
মুহাম্মাদের দেখানো ওই 
পথটা তুমি ধরো ।
যদি তার দেখানো শিক্ষা গুলো..  
এই ধরাতে জ্বালো । 
সত্য-ন্যায়ের আলো দিয়ে
দুনিয়া করো ভলো। 
মুহাম্মদকে জানো..............

প্রেম ভালোবাসা ছড়াও
ও ভাই দিকে দিকে, 
থাকো দূরে সদা তুমি 
মিথ্যাবাদীর থেকে । 
মোহাম্মদের বানীগুলো..
মেনে যদি চলো । 
সত্য-ন্যায়ের আলো দিয়ে
দুনিয়া করো ভলো। 
মুহাম্মদকে জানো..............।।

রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

এসো তরুণ আলোর পথে

এসো তরুণ আলোর পথে 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

এসো তরুণ আলোর পথে,
সমাজ গড়ার আঙিনাতে,
সত্য ন্যায়ের বীজটি বুনি,
আশা ভরা প্রভাতে।

এসো নিই জ্ঞান, গড়ি চরিত্র,
ভালোবাসার বাঁধনে,
তাকওয়ার আলোয় হৃদয় ভরে,
চলি সত্য পানে । 
যে পথে তোমার ভবিষ্যৎ ...
রব দিয়েছেন গেঁথে ।
সত্য ন্যায়ের বীজটি বুনি,
আশা ভরা প্রভাতে।
এসো তরুণ..........

এসো ত্যাগের পথে এগিয়ে চলি
অন্ধকার মাড়িয়ে, 
ঐক্যের স্বপ্ন সবার মাঝে 
আমরা দেই ছড়িয়ে ।
এই আশাতেই পথ চলা.. 
হোক আমাদের নীতিতে ।
সত্য ন্যায়ের বীজটি বুনি,
আশা ভরা প্রভাতে।
এসো তরুণ..........।।

শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫

আমরাই ভবিষ্যত

আমরাই ভবিষ্যত
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

আমরাই ভবিষ্যত শিশু কিশোর,
আগামী দিনের আলো,
আমাদের স্বপ্ন দিয়ে গড়বো,
ভালো থেকে ভালো।

উন্নত চরিত্র গড়তে সদা
কিশোর অঙ্গন ডাকে,
জ্ঞান-আদর্শ, নৈতিক শিক্ষা
নিতে এখন থেকে।
এসো তাই শিশু কিশোর …
জীবনে খুঁজি আলো,
আমাদের স্বপ্ন দিয়ে গড়বো,
ভালো থেকে ভালো।
আমরাই ভবিষ্যত……………

আলী ওমরের মতো হবো
আশা রেখেছি বুকে,
অন্যায় জুলুম জ্ঞানের আলোয়
দেবো আমরা রুখে।
এসো তাই শিশু কিশোর …
দূর করি কালো,
আমাদের স্বপ্ন দিয়ে গড়বো,
ভালো থেকে ভালো।
আমরাই ভবিষ্যত……………।।

বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

মেজাজ

মেজাজ 
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

তুমি যদি মেজাজ হারাও
ভাঙবে বোনা স্বপ্ন,
শান্তির বুকে উঠবে আগুন,
হারাবে সকল যত্ন।

জানো! সম্পর্ক হারানো মানে
জমে ভুলের পাহাড়,
জীবন যুদ্ধে যাবে হেরে
হারিয়ে যাবে অধিকার।

তাই রাগের বশে বারেবারে
কথায় করোনা আঘাত,
ভেঙে যাবে বিশ্বাসগুলো,
বেড়েই যাবে সংঘাত।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি মানুষকে বিশেষভাবে রাগ ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দিয়েছেন। হঠাৎ মেজাজ হারানো শুধু নিজের ক্ষতিই নয়, বরং সম্পর্ক, ভালোবাসা ও শান্তির পরিবেশকে ধ্বংস করে দেয়।

প্রথম স্তবক:
“তুমি যদি মেজাজ হারাও ভাঙবে বোনা স্বপ্ন, শান্তির বুকে উঠবে আগুন, হারাবে সকল যত্ন।”
👉 মেজাজ হারালে মানুষের শান্তি নষ্ট হয়। যেসব স্বপ্ন যত্নে গড়া হয়েছিল, তা ভেঙে যায়। শান্তির পরিবেশে অশান্তি ও আগুন জ্বলে ওঠে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“জানো! সম্পর্ক হারানো মানে জমে ভুলের পাহাড়, জীবন যুদ্ধে যাবে হেরে হারিয়ে যাবে অধিকার।”
👉 রাগের কারণে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে জীবনে ভুল জমতে থাকে। তখন মানুষ জীবনের লড়াইয়ে হেরে যায়, নিজের অধিকারও হারাতে থাকে।

তৃতীয় স্তবক:
“তাই রাগের বশে বারেবারে কথায় করোনা আঘাত, ভেঙে যাবে বিশ্বাসগুলো, বেড়েই যাবে সংঘাত।।
👉 রাগের বশে কাউকে কটু কথা বলা বা আঘাত করলে বিশ্বাস ভেঙে যায়। বিশ্বাস ভাঙলে সম্পর্কেও সংঘাত বাড়ে । 
---

👉 সারকথা: কবিতাটি আমাদের সতর্ক করছে—রাগ নিয়ন্ত্রণ না করলে শান্তি নষ্ট হয়, সম্পর্ক ভাঙে, জীবনে হারাতে হয় অনেক কিছু। তাই রাগ নয়, ধৈর্য ও বোঝাপড়াই জীবনের সঠিক পথ।




বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

আমার ভাষা বাংলা

আমার ভাষা বাংলা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

আমার ভাষা বাংলা রে ভাই 
চির সত্যের গান, 
এই ভাষাতেই ফোটে যে ফুল 
ছড়ায় সুপ্ত ঘ্রাণ । 

আমার ভাষায় নেই ভেদাভেদ 
কোনো জাত-পাত, 
তোমার ভাষায় কেন করো ভাই 
মানুষের আঘাত । 
বাংলা ভাষা মায়ের ভাষা..  
বাংলা আমার প্রাণ । 
এই ভাষাতেই ফোটে যে ফুল 
ছড়ায় সুপ্ত ঘ্রাণ । 
আমার ভাষা........ 

দেশ স্বাধীনে বাংলা ভাষী 
দিয়েছে শত প্রাণ, 
সেই বাঙালি আজকে কেন 
হয় গো অপমান । 
হাজারো ভাষার এদেশ আমার.. 
অধিকার সমান । 
এই ভাষাতেই ফোটে যে ফুল 
ছড়ায় সুপ্ত ঘ্রাণ । 
আমার ভাষা........ ।। 






সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

বিশ্বস্ত সঙ্গী

বিশ্বস্ত সঙ্গী 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

বিশ্বস্ত সঙ্গী যদি পাও,
তাকে সঙ্গী করো,
তোমার হৃদয়ের ভালোবাসা
নির্বিচারে উজাড় করো।

থেকো পাশে সদা তার
হোক না যতই ঝড়,
তোমার বিশ্বাসে রাখো তাকে
ভালোবাসার পাহাড়।

মনের কথা খুলে বলো,
লুকিও না ক্ষোভ,
সঙ্গী হবে আয়না তোমার —
দুঃখ বুঝবে সব।

সময় যদি আনে দুর্দিন,
তবু রবেনা সংশয়,
ভালোবাসার বন্ধন হোক
আমাদের পরিচয়।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি একজন সত্যিকারের বিশ্বস্ত সঙ্গীর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। জীবনে এমন সঙ্গী পাওয়া মানে হলো ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সহমর্মিতার একটি আশ্রয় পাওয়া।

প্রথম স্তবক:
“বিশ্বস্ত সঙ্গী যদি পাও, তাকে সঙ্গী করো,
তোমার হৃদয়ের ভালোবাসা নির্বিচারে উজাড় করো।”
👉 কবি বলছেন—যদি জীবনে সত্যিকারের একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী পাওয়া যায়, তবে তাকে গ্রহণ করো, এবং তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও।

দ্বিতীয় স্তবক:
“থেকো পাশে সদা তার হোক না যতই ঝড়,
তোমার বিশ্বাসে রাখো তাকে ভালোবাসার পাহাড়।”
👉 ভালো সঙ্গীকে কখনো ঝড়-ঝাপটা বা কষ্টের সময়ে একা ফেলে দিও না। বিশ্বাস ও ভালোবাসা দিয়ে সম্পর্ককে পাহাড়সম দৃঢ় করো।

তৃতীয় স্তবক:
“মনের কথা খুলে বলো, লুকিও না ক্ষোভ,
সঙ্গী হবে আয়না তোমার — দুঃখ বুঝবে সব।”
👉 সঙ্গীর কাছে মনের কথা প্রকাশ করতে হবে। দুঃখ-ক্ষোভ লুকিয়ে রাখা নয়। সঙ্গী যেন আয়নার মতো হয়—যে সব দুঃখ বোঝে ও উপলব্ধি করে।

চতুর্থ স্তবক:
“সময় যদি আনে দুর্দিন, তবু রবেনা সংশয়,
ভালোবাসার বন্ধন হোক আমাদের পরিচয়।”
👉 জীবনে দুর্দিন এলে, বিশ্বস্ত সঙ্গীর সাথে কোনো সংশয় থাকা উচিত নয়। কারণ প্রকৃত সম্পর্কের আসল পরিচয় হলো ভালোবাসার দৃঢ় বন্ধন।

---

👉 সারকথা:
কবিতাটি শেখাচ্ছে—জীবনের সেরা সম্পদ হলো বিশ্বস্ত সঙ্গী। তাকে বিশ্বাস, ভালোবাসা ও খোলামেলা মনোভাবের মাধ্যমে ধরে রাখতে হবে। দুর্দিন-সুদিনে পাশে থাকলেই সত্যিকারের সঙ্গীর পরিচয় মেলে।

আদর্শ নেতা

আদর্শ নেতা
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

নেতা সে — যে করে কাজ,
করে না অহংকার,
সত্য পথে চলে সদা,
ভয় পায় না ঝঞ্ঝার।

নেতা সে — যে চায় ভালো,
জনতারই মঙ্গল,
নিজের চেয়ে বেশি ভাবে,
দেশকে করতে উজ্জ্বল।

নেতা সে — যে নত নয়
কারো হুমকিতে কখনো,
ন্যায়ের উপর থাকে অবিরাম,
যে বিধান রবের দেখানো।

নেতা সে — যে শেখায় সাহসীকতা,
থাকে সামনের সারিতে,
সে নিজেই গড়ে উদাহরণ
বাতিলকে রুখে দিতে।

নেতা সে — যার চাহনিতে আছে
দীপ্ত স্বপ্নে ভরা,
আদর্শে গড়তে সদা প্রস্তুত
এই সুন্দর বসুন্ধরা।। 


অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি একজন সত্যিকারের আদর্শ নেতার গুণাবলি ফুটিয়ে তুলেছেন। নেতার প্রকৃত দায়িত্ব কী হওয়া উচিত, তা পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।

প্রথম স্তবক:
“নেতা সে — যে করে কাজ, করে না অহংকার,
সত্য পথে চলে সদা, ভয় পায় না ঝঞ্ঝার।”
👉 সত্যিকারের নেতা কাজে বিশ্বাসী, অহংকার করে না। তিনি সবসময় সত্যের পথে চলেন, এবং ঝড়-ঝাপটার ভয় করেন না।

দ্বিতীয় স্তবক:
“নেতা সে — যে চায় ভালো, জনতারই মঙ্গল,
নিজের চেয়ে বেশি ভাবে, দেশকে করতে উজ্জ্বল।”
👉 নেতা কেবল নিজের লাভের কথা ভাবেন না। তিনি জনগণের মঙ্গল চান এবং দেশকে উন্নত করতে নিজেকে উৎসর্গ করেন।

তৃতীয় স্তবক:
“নেতা সে — যে নত নয় কারো হুমকিতে কখনো,
ন্যায়ের উপর থাকে অবিরাম, যে বিধান রবের দেখানো।”
👉 নেতা কখনো অন্যায় বা হুমকির কাছে নত হয় না। তিনি আল্লাহর দেখানো ন্যায়নীতির পথেই অবিচল থাকেন।

চতুর্থ স্তবক:
“নেতা সে — যে শেখায় সাহসীকতা, থাকে সামনের সারিতে,
সে নিজেই গড়ে উদাহরণ বাতিলকে রুখে দিতে।”
👉 নেতা জনগণকে সাহস জোগান, তিনি নিজে সামনে দাঁড়ান। তিনি নিজেকে উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং মিথ্যা বা অন্যায়কে রুখে দেন।

পঞ্চম স্তবক:
“নেতা সে — যার চাহনিতে আছে দীপ্ত স্বপ্নে ভরা,
আদর্শে গড়তে সদা প্রস্তুত এই সুন্দর বসুন্ধরা।।
👉 আদর্শ নেতা দূরদর্শী। তাঁর চোখে উজ্জ্বল স্বপ্ন থাকে। তিনি সর্বদা প্রস্তুত থাকেন পৃথিবীকে আদর্শে সাজাতে।

---

👉 সারকথা:
কবিতায় বোঝানো হয়েছে—আদর্শ নেতা কেবল ক্ষমতালোভী বা অহংকারী নন। তিনি সত্য, ন্যায়, সাহস, আত্মত্যাগ ও মানবতার প্রতীক। তাঁর লক্ষ্য হলো জনগণ ও দেশের কল্যাণ, এবং পৃথিবীকে আদর্শের আলোয় আলোকিত করা।


#আদর্শনেতা #নেতৃত্ব #বাংলাকবিতা #নেতারগুণাবলী #ইসলামিককবিতা #সামাজিকচেতনা  
#TarikulKhalashi #BanglaPoem #Leadership #IdealLeader #IslamicPoetry #Inspirational  
#নেতা_সে #সচেতনতা #জনসেবক #সত্যেরপথে #ভয়হীন #বাংলাসাহিত্য  
#MuslimPoet #SocialPoetry #PoetFromBengal #VoiceOfTruth #Abritti #Kobita 
#আদর্শনেতা #নেতৃত্ব #বাংলাকবিতা #নেতারগুণাবলী #সত্যেরপথে  
#TarikulKhalasi #Leadership #BanglaPoetry #IdealLeader  
#ইসলামিককবিতা #সামাজিকচেতনা #VoiceOfTruth #Abritti



রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

এসো আবার

এসো আবার 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

এসো আবার স্বপ্নগুলো
করি বাস্তবায়ন,
নিঃস্বার্থে কাজগুলোকেই
করি মূল্যায়ন।

এসো আবার আগের মতো
হই ঐক্যবদ্ধ,
ভুলে যাই ক্ষুদ্র হিংসা,
বন্ধ হোক যুদ্ধ।

এসো আবার সাহস বুকে
দুর্নীতিকে দিই রুখে,
নব প্রভাত আসবে তবে
থাকবে সবাই সুখে।

এসো আবার ভালোবাসি
পথের ধারের মানুষগুলো,
ধূলি- ধূসর মুখগুলি চায়
একটু আশার আলো। 

এসো আবার গড়ে তুলি
আলো মাখা দিন,
মানবতার ছায়াতলে
থাকুক সত্য দ্বীন।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি সমাজকে নতুন করে জাগানোর ডাক দিয়েছেন। তিনি চান—মানুষ আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিঃস্বার্থ কাজ, ভালোবাসা, ন্যায় ও মানবতার ভিত্তিতে একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলুক।

প্রথম স্তবক:
“এসো আবার স্বপ্নগুলো করি বাস্তবায়ন, নিঃস্বার্থে কাজগুলোকেই করি মূল্যায়ন।”
👉 স্বপ্ন শুধু কল্পনায় নয়, বাস্তব জীবনে রূপ দিতে হবে। যে কাজ নিঃস্বার্থভাবে হয়, তারই মূল্য আছে। তাই নিঃস্বার্থ কাজকেই গুরুত্ব দিতে হবে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“এসো আবার আগের মতো হই ঐক্যবদ্ধ, ভুলে যাই ক্ষুদ্র হিংসা, বন্ধ হোক যুদ্ধ।”
👉 মানুষকে একত্রিত হতে হবে। ছোটখাটো হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। যুদ্ধ নয়, ঐক্যই মানবতার পথ।

তৃতীয় স্তবক:
“এসো আবার সাহস বুকে দুর্নীতিকে দিই রুখে, নব প্রভাত আসবে তবে থাকবে সবাই সুখে।”
👉 দুর্নীতি সমাজকে গ্রাস করছে। সাহস নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তবেই নতুন প্রভাত আসবে, আর সমাজ সুখী হবে।

চতুর্থ স্তবক:
“এসো আবার ভালোবাসি পথের ধারের মানুষগুলো, ধূলি-ধূসর মুখগুলি চায় একটু আশার আলো।”
👉 সমাজে যারা অবহেলিত, পথের ধারে পড়ে থাকা দুঃখী মানুষ, তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে। তারা আশার আলো চায়, সেই আলো দিতে হবে।

পঞ্চম স্তবক:
“এসো আবার গড়ে তুলি আলো মাখা দিন, মানবতার ছায়াতলে থাকুক সত্য দ্বীন।।
👉 কবির চূড়ান্ত আহ্বান—আবার সবাই মিলে সত্য ও মানবতার পথে এগিয়ে আসি। একটি আলো ভরা দিন গড়ে তুলি, যেখানে সত্য, শান্তি ও দ্বীন (ধর্ম) একসাথে প্রতিষ্ঠিত হবে।

---

👉 সারকথা: কবিতাটি একটি জাগরণী আহ্বান—ঐক্য, ভালোবাসা, নিঃস্বার্থ কাজ, দুর্নীতি প্রতিরোধ, মানবতা ও সত্যের ছায়াতলে একটি নতুন সমাজ গড়ে তোলার ডাক।

শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

বাঁধনের অভাব

 বাঁধনের অভাব
 তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

যে বাঁধন ছিঁড়ে গেলে
হারিয়ে যায় সব,
দিকে দিকে সেই বাঁধনের
আজ খুবই অভাব।

যেখানে ছিল আগে
ভালোবাসার টান,
সেখানে আজ দেখি
স্বার্থপূজার ঘ্রাণ।

ভ্রাতৃত্ব হারিয়ে আজ
হৃদয় হয়েছে শুষ্ক,
জমেছে শত ক্ষোভ —
আর বেড়েছে দুঃখ।

বেড়েছে ঝগড়া–হিংসা,
কমেছে সহানুভূতি,
মানবতার নামে আজ
বিক্রি হয় মিথ্যাবৃতি।

স্বজন চেনে টাকা,
অচেনা চায় দাম,
মমতার সে বাঁধন
ভাঙছে প্রতি কাম।

এসো আবার গড়ি
ভালোবাসার গ্রাম,
যেখানে বাঁধন হবে —
আদর্শ ইসলাম।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি তুলে ধরেছেন মানুষের মধ্যে আজ যে ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব, সহানুভূতি ও মানবিকতার অভাব, তার চিত্র। একসময় যেখানে সম্পর্কগুলো ছিল ভালোবাসা ও আন্তরিকতার বাঁধনে গাঁথা, সেখানে এখন ভেঙে যাচ্ছে সে বন্ধন।

প্রথম স্তবক:
“যে বাঁধন ছিঁড়ে গেলে হারিয়ে যায় সব,
দিকে দিকে সেই বাঁধনের আজ খুবই অভাব।”
👉 কবি বলছেন, সম্পর্কের যে বন্ধন ছিঁড়ে গেলে সবকিছু ভেঙে পড়ে—আজ সমাজে সেই বন্ধনের ভীষণ অভাব দেখা দিচ্ছে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“যেখানে ছিল আগে ভালোবাসার টান,
সেখানে আজ দেখি স্বার্থপূজার ঘ্রাণ।”
👉 আগে সম্পর্ক গড়ে উঠত ভালোবাসা ও টান দিয়ে। এখন সেই জায়গায় এসেছে স্বার্থপরতা ও ভণ্ডামির গন্ধ।

তৃতীয় স্তবক:
“ভ্রাতৃত্ব হারিয়ে আজ হৃদয় হয়েছে শুষ্ক,
জমেছে শত ক্ষোভ — আর বেড়েছে দুঃখ।”
👉 ভ্রাতৃত্বের অনুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে মানুষ একে অপরের প্রতি ক্ষোভে ভরে যাচ্ছে এবং দুঃখ বেড়ে চলেছে।

চতুর্থ স্তবক:
“বেড়েছে ঝগড়া–হিংসা, কমেছে সহানুভূতি,
মানবতার নামে আজ বিক্রি হয় মিথ্যাবৃতি।”
👉 সমাজে আজ ঝগড়া-হিংসা বেড়েছে, কিন্তু সহানুভূতি কমেছে। মানবতার নামে ভণ্ডামি ও প্রতারণাই চলছে।

পঞ্চম স্তবক:
“স্বজন চেনে টাকা, অচেনা চায় দাম,
মমতার সে বাঁধন ভাঙছে প্রতি কাম।”
👉 আজকের যুগে আত্মীয়স্বজনও টাকা ছাড়া চেনে না। অচেনা মানুষও মূল্য চায়। তাই মমতার বাঁধন ভেঙে যাচ্ছে বারবার।

ষষ্ঠ স্তবক (সমাধান):
“এসো আবার গড়ি ভালোবাসার গ্রাম,
যেখানে বাঁধন হবে — আদর্শ ইসলাম।।
👉 কবি আহ্বান জানাচ্ছেন—আসো, আমরা আবার ভালোবাসা, মমতা, ভ্রাতৃত্ব ও আদর্শ ইসলামের আলোকে একটি নতুন সমাজ গড়ে তুলি।

---

👉 সারকথা:
কবিতাটি বর্তমান সমাজের স্বার্থপরতা, ভ্রাতৃত্বহীনতা, ভণ্ডামি ও মানবিকতার অভাবের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। একইসঙ্গে এটি একটি সমাধানের ডাক—ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও ইসলামের আদর্শে সমাজকে নতুন করে গড়ে তোলার।

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

জামাতে ইসলামী হিন্দ

 জামাআতে ইসলামী হিন্দ 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

জামাআতে ইসলামী হিন্দ,
লক্ষ একামাতে দ্বীন,
আল্লাহর হুকুম করতে কায়েম —
গড়তে চাই জমিন।

চাই এ জামাআত দাওয়াত দিতে
প্রতিটি ঘরে ঘরে,
ইসলামের আলো জ্বলে উঠুক
সব মানব-অন্তরে।
সেই আশাতেই চলছে পথে...
গড়তে একামাতে দ্বীন।
জামাআতে ইসলামী......

নবীর দেখানো পথে হেঁটে
জাগাতে চাই সমাজ,
একতা, তাকওয়ার গুণাবলী
মানতে তোলে আওয়াজ।
আদর্শ হবে শুধুই ইসলাম...
আহ্বান করে প্রতিদিন।
জামাআতে ইসলামী......।।


মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

পদ

পদ
তরিকুল ইসলাম খালাসী
 মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

যে পদ পাওয়ার আশায়
করছো জুলুম আজ,
অক্ষরে অক্ষরে থাকবে লেখা —
শোনো, তুমিই জুলুমবাজ।

তোমার মতো কত শত
দেখেছি জুলুমকারী,
সময় ফুরালেই যেতে হয়েছে —
এক সেকেন্ড হয়নি দেরি।

তুমি অর্জন করেছ খ্যাতি —
জুলুম করে, মাস্তান,
তোমার আচরণে হাসে
বড় ইবলিশ শয়তান।

ভক্তি-শ্রদ্ধা তোমার কাছে
পাইনি কখনো সম্মান,
দেশ ও দশে জেনেছে তোমায় —
বেইমান, তুমিই বেইমান।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি কঠোর সমালোচনা করেছেন সেইসব মানুষের, যারা কেবল পদ ও ক্ষমতা পাওয়ার জন্য অন্যায়, জুলুম ও সন্ত্রাস চালায়। কবি বোঝাতে চেয়েছেন—ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, অন্যায়ের ফল একদিন ভোগ করতেই হয়।

প্রথম স্তবক:
“যে পদ পাওয়ার আশায় করছো জুলুম আজ,
অক্ষরে অক্ষরে থাকবে লেখা — শোনো, তুমিই জুলুমবাজ।”
👉 কবি বলছেন, যারা পদ বা ক্ষমতার লোভে অন্যায় করে, ইতিহাসে তারা চিরকাল জুলুমবাজ নামেই পরিচিত হবে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“তোমার মতো কত শত দেখেছি জুলুমকারী,
সময় ফুরালেই যেতে হয়েছে — এক সেকেন্ড হয়নি দেরি।”
👉 অন্যায়কারীরা অনেক এসেছে, আবার সময়ের সঙ্গে সরে গিয়েছে। ক্ষমতা কারো কাছে স্থায়ী হয় না, এক মুহূর্তেই সব হারিয়ে যায়।

তৃতীয় স্তবক:
“তুমি অর্জন করেছ খ্যাতি — জুলুম করে, মাস্তান,
তোমার আচরণে হাসে বড় ইবলিশ শয়তান।”
👉 যারা জুলুম করে নাম কামায়, তারা প্রকৃতপক্ষে শয়তানেরই সঙ্গী। তাদের খ্যাতি গৌরবময় নয়, বরং লজ্জাজনক।

চতুর্থ স্তবক:
“ভক্তি-শ্রদ্ধা তোমার কাছে পাইনি কখনো সম্মান,
দেশ ও দশে জেনেছে তোমায় — বেইমান, তুমিই বেইমান।।
👉 ক্ষমতার জোরে মানুষকে দমন করলেও শ্রদ্ধা অর্জন করা যায় না। শেষ পর্যন্ত দেশ ও জনগণ জানে—তুমি বিশ্বাসঘাতক, বেইমান ছাড়া আর কিছু নও।

---

👉 সারকথা:
কবিতাটি একটি অন্যায়-বিদ্বেষী প্রতিবাদী কবিতা। এটি বোঝাচ্ছে—অন্যায় করে, জুলুম চালিয়ে, মাস্তানি দেখিয়ে কেউ চিরকাল টিকে থাকতে পারে না। প্রকৃত সম্মান আসে ন্যায় ও সত্যের পথে চলার মাধ্যমে, জুলুমের পথে নয়।

সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

ধার ধরি না

ধার ধরি না
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

আমি তোমাকে ধার ধরি না
দেখাও যতই ভয়,
জেনে রেখো — সত্য সত্যই থাকে,
দেখেছি বাতিলের পরাজয়।

তুমি করো চাঁদাবাজি, বোমাবাজি,
দশের থেকে নাও ছিনিয়ে,
শুনে রাখো — সময় কথা বলে
হকের উপর দাঁড়িয়ে।

বলো, আর কতদিন!
পেঁচায় পেঁচায়ে দিন কাটাবে?
হাজারো মানুষের অভিশাপ তোমার
হয়তো কপালেই জুটবে।

তাই এখনো সময় আছে!
ফিরে এসো সত্য পথে,
অবুঝ মনটাকে বাধ্য করো
স্রষ্টাকে মেনে নিতে।। 


অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি অন্যায়, সন্ত্রাস ও ভয়–প্রদর্শনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছেন যে সত্যের উপর দাঁড়ানো মানুষকে কখনোই ভয় দেখানো যায় না। অন্যদিকে, অন্যায়কারীরা যতই শক্তিশালী হোক, শেষপর্যন্ত সময়ই প্রমাণ করে সত্যের বিজয়।
---
প্রথম স্তবক:
“আমি তোমাকে ধার ধরি না
দেখাও যতই ভয়,
জেনে রেখো — সত্য সত্যই থাকে,
দেখেছি বাতিলের পরাজয়।”
👉 কবি বলছেন—অন্যায়কারীর ভয় দেখানোতে তিনি ভীত নন। কারণ সত্য অটল থাকে, আর মিথ্যা (বাতিল) শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“তুমি করো চাঁদাবাজি, বোমাবাজি,
দশের থেকে নাও ছিনিয়ে,
শুনে রাখো — সময় কথা বলে
হকের উপর দাঁড়িয়ে।”
👉 এখানে অন্যায়কারীদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে—চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ছিনতাই ইত্যাদি। কিন্তু কবি মনে করিয়ে দেন, সময়ই প্রমাণ করে কে সঠিক। সত্য (হক)–এর উপর দাঁড়ানো মানুষই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“বলো, আর কতদিন!
পেঁচায় পেঁচায়ে দিন কাটাবে?
হাজারো মানুষের অভিশাপ তোমার
হয়তো কপালেই জুটবে।”
👉 কবি প্রশ্ন রাখছেন—ছলচাতুরী ও অন্যায় করে আর কতদিন বাঁচবে? মানুষের অভিশাপ একদিন অন্যায়কারীর সর্বনাশ ডেকে আনবেই।
---
চতুর্থ স্তবক:
“তাই এখনো সময় আছে!
ফিরে এসো সত্য পথে,
অবুঝ মনটাকে বাধ্য করো
স্রষ্টাকে মেনে নিতে।। ”
👉 কবি সতর্কবার্তা দিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন—এখনো সুযোগ আছে। অন্যায় থেকে ফিরে এসে সত্য ও স্রষ্টার পথে চলতে হবে। জেদি মনকে সংযত করে আল্লাহ/স্রষ্টাকে মেনে নিতে হবে।

---

👉 সারকথা: কবিতাটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কবিতা। কবি বলেছেন—ভয় দেখানো, সন্ত্রাস, ছলচাতুরী কোনোটাই সত্যকে হারাতে পারে না। অন্যায়কারীর জন্য মানুষের অভিশাপ অনিবার্য। তাই সময় থাকতে সত্য ও স্রষ্টার পথে ফিরে আসাই মুক্তির একমাত্র উপায়।

শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

রাত

রাত
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

রাত নেমে এলে নিঃশব্দে,
যদি ভয় পায় পাপী মন,
পাপ ছেড়ে পূর্ণেতে ভরো
নতুন করে এই জীবন।

চোখের জলে বলো হে রব,
আমি আর করবো না ভুল,
সত্য পথেই থাকবো সদা —
আমার তওবা করো কবুল।

তিনি দেখেন এবং শোনেন
আমাদের এই মনের কথা,
আমরাই ভাবি না শুধু
নষ্ট করি সময় অযথা।

এসো, আর নয় সময় নষ্ট —
আলো পাবো আঁধার শেষে,
রবের পথে ফিরলে সাথী
ক্ষমা পাবো ভালোবেসে।

রাতের বুকে আশা নিয়ে
সাফ করো অন্তরের কালো,
রবের প্রেমেই জ্বলুক সদা —
জীবনের এই আলো।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি রাতকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছেন—যেখানে নিস্তব্ধতা মানুষকে নিজের ভুল–ত্রুটি নিয়ে ভাবতে সাহায্য করে। কবি বলেছেন, রাতের অন্ধকারে পাপী মন ভয় পেলে উচিত নতুন জীবন শুরু করা, তওবা করে রবের পথে ফিরে আসা। কারণ আল্লাহ সব শোনেন–দেখেন এবং ক্ষমাশীল। কবি আহ্বান করেছেন—অযথা সময় নষ্ট না করে রবের প্রেমে জীবন আলোকিত করতে হবে। 

---

প্রথম স্তবক:
“রাত নেমে এলে নিঃশব্দে,
যদি ভয় পায় পাপী মন,
পাপ ছেড়ে পূর্ণেতে ভরো
নতুন করে এই জীবন।”
👉 এখানে রাতের নীরবতাকে আত্মসমালোচনার সময় হিসেবে দেখানো হয়েছে। যদি ভেতরের মন ভয় পায়, তবে পাপ ত্যাগ করে নতুনভাবে জীবন সাজাতে হবে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“চোখের জলে বলো হে রব,
আমি আর করবো না ভুল,
সত্য পথেই থাকবো সদা —
আমার তওবা করো কবুল।”
👉 কবি বলছেন—তওবার মাধ্যমে রবের কাছে ফিরে আসতে হবে। চোখের জল দিয়ে বলতে হবে—আগে ভুল করেছি, আর করবো না। কেবল সত্যের পথেই চলবো, এবং সেই তওবা যেন রব কবুল করেন।
---
তৃতীয় স্তবক:
“তিনি দেখেন এবং শোনেন
আমাদের এই মনের কথা,
আমরাই ভাবি না শুধু
নষ্ট করি সময় অযথা।”
👉 আল্লাহ সব দেখেন ও শোনেন। মানুষের অন্তরের কথাও তিনি জানেন। কিন্তু মানুষ প্রায়ই এ নিয়ে ভাবে না, বরং অযথাই সময় নষ্ট করে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“এসো, আর নয় সময় নষ্ট —
আলো পাবো আঁধার শেষে,
রবের পথে ফিরলে সাথী
ক্ষমা পাবো ভালোবেসে।”
👉 কবি আহ্বান করছেন—অযথা সময় নষ্ট না করে এখনই রবের পথে ফিরতে হবে। কারণ অন্ধকার শেষে আলো আসে। রবের দিকে ফিরলে ভালোবেসেই তাঁর কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়া যাবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“রাতের বুকে আশা নিয়ে
সাফ করো অন্তরের কালো,
রবের প্রেমেই জ্বলুক সদা —
জীবনের এই আলো।। ”
👉 শেষ স্তবকে কবি বলছেন—রাত হোক নতুন আশার সূচনা। অন্তরের কালো মুছে ফেলতে হবে। রবের প্রেমেই জীবনের আলো জ্বলুক সদা।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতায় মূল শিক্ষা হলো—পাপের অন্ধকার থেকে ফিরে এসে তওবা করতে হবে, রবের পথে চলতে হবে। রাতের নিস্তব্ধতা যেন মানুষকে আত্মসমালোচনার সুযোগ দেয়, যাতে ভোরবেলা নতুন করে আলোর পথে জীবন শুরু করা যায়।


মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫

খারাপ কিছু

খারাপ কিছু 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

খারাপ কিছু যদি না দেখো,
বলো না তা মিথ্যে করে,
শোনা কথায় মন ভাসালে
মাথা কেবল ব্যথায় ভরে।

নিজে দেখো, বুঝে বলো,
চলো সদা সত্য পথে,
অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে
যেও না যে ভুল সিদ্ধান্তে।

নয়তো সদা পস্তাবে তুমি
ভাঙবে শুধু এই হৃদয়,
ভালোর সাথে সঙ্গ দিয়ে
ছিনিয়ে নাও তোমার বিজয়।। 


অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি সমাজের এক সাধারণ ভুলের দিকে আলোকপাত করেছেন—অন্যের সম্পর্কে যাচাই না করেই শুনে নেওয়া কথা বিশ্বাস করা এবং মিথ্যা রটানো। কবি উপদেশ দিচ্ছেন যে, সত্য নিজ চোখে দেখে–বুঝে কথা বলতে হবে, অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্তে না পৌঁছাতে হবে। নইলে অনুশোচনাই জীবন ভর ভুগতে হবে। সত্য–ভালোকে সঙ্গ নিলে তবেই বিজয় মিলবে।

---
প্রথম স্তবক:
“খারাপ কিছু যদি না দেখো,
বলো না তা মিথ্যে করে,
শোনা কথায় মন ভাসালে
মাথা কেবল ব্যথায় ভরে।”
👉 কবি বলছেন—নিজে না দেখে বা যাচাই না করে অন্যের সম্পর্কে মন্দ কথা বলা অন্যায়। কেবল শোনা কথায় মন ভাসালে শেষে কষ্ট আর সমস্যাই ডেকে আনে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“নিজে দেখো, বুঝে বলো,
চলো সদা সত্য পথে,
অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে
যেও না যে ভুল সিদ্ধান্তে।”
👉 শিক্ষা হলো—নিজে যাচাই করে সত্য বুঝে কথা বলতে হবে। সত্যের পথে চলাই সঠিক। অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে যদি অন্ধভাবে কিছু মেনে নেওয়া হয়, তবে ভুল সিদ্ধান্তে পৌঁছানো অবশ্যম্ভাবী।
---
তৃতীয় স্তবক:
“নয়তো সদা পস্তাবে তুমি
ভাঙবে শুধু এই হৃদয়,
ভালোর সাথে সঙ্গ দিয়ে
ছিনিয়ে নাও তোমার বিজয়।। ”
👉 সতর্কবার্তা: যাচাই না করে অন্যায় করলে পরে অনুশোচনা ছাড়া কিছুই থাকবে না। হৃদয় ভাঙবে, মন কষ্ট পাবে। তাই সত্য ও ভালো মানুষের সঙ্গে সঙ্গ দিতে হবে—তবেই জীবনে বিজয় অর্জন সম্ভব।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতা মানুষের জন্য একটি নৈতিক শিক্ষা—যাচাই না করে অন্যের সম্পর্কে খারাপ বলা বা শোনা কথায় ভেসে যাওয়া উচিত নয়। সত্যকে আঁকড়ে ধরে চললে এবং ভালো মানুষের সঙ্গ নিলে তবেই জীবনে শান্তি ও সাফল্য আসবে।

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

সহনশীলতা

সহনশীলতা
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

সবর করা বড় গুণ
থাকে যার মনে,
তার চোখেই শান্তি ধারা
নামে প্রতিক্ষণে।

রাগে মন ফোঁসে যদি
থাকো চুপ করে,
জয়ী হয় সেই মানুষ
যে রবের ভরসা করে।

গালি যদি কেউ দেয়
বলো না কিছু তার,
ক্ষমার চোখে দখলে তুমি
পাবেই সঠিক বিচার।

রব নিজেই ন্যায়বিচারক,
তিনিই দেখেন সব, 
ফুরিয়ে যাবে অন্যায়ের দিন 
দিতেই হবে হিসাব ।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি সহনশীলতা ও ধৈর্যের গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। রাগ, গালি বা অন্যায়ের মুখোমুখি হলেও ধৈর্য ধরে আল্লাহর ভরসা করলে সফলতা ও সঠিক বিচার মিলবেই। মূল শিক্ষা হলো—ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতা মানুষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ।
---
প্রথম স্তবক:
“সবর করা বড় গুণ
থাকে যার মনে,
তার চোখেই শান্তি ধারা
নামে প্রতিক্ষণে।”
👉 ধৈর্য (সবর) মানুষের বড় গুণ। যার মনে ধৈর্য থাকে, তার জীবন শান্তিতে ভরে ওঠে, তার চোখে নেমে আসে প্রশান্তির ধারা।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“রাগে মন ফোঁসে যদি
থাকো চুপ করে,
জয়ী হয় সেই মানুষ
যে রবের ভরসা করে।”
👉 রাগ উঠলেও চুপ থাকা উত্তম। যে মানুষ রাগ সংবরণ করে এবং আল্লাহর ভরসা রাখে, সেই-ই প্রকৃত বিজয়ী হয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“গালি যদি কেউ দেয়
বলো না কিছু তার,
ক্ষমার চোখে দখলে তুমি
পাবেই সঠিক বিচার।”
👉 কেউ গালি দিলে তার জবাবে গালি দেওয়া নয়, বরং চুপ থাকা ও ক্ষমা করাই শ্রেষ্ঠ কাজ। ক্ষমাশীলতার মাধ্যমেই একদিন আল্লাহর কাছ থেকে সঠিক বিচার মিলবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“রব নিজেই ন্যায়বিচারক,
তিনিই দেখেন সব,
ফুরিয়ে যাবে অন্যায়ের দিন
দিতেই হবে হিসাব।। ”
👉 আল্লাহই প্রকৃত ন্যায়বিচারক। তিনি সব দেখেন ও জানেন। অন্যায়কারী যতদিনই অন্যায় করুক, একদিন তার দিন শেষ হবে এবং তাকে হিসাব দিতেই হবে।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—রাগ, গালি ও অন্যায়ের মুখেও ধৈর্য ও সহনশীলতা বজায় রাখা উচিত। আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে প্রকৃত বিচার ও শান্তি অবশ্যই মিলবে।




শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫

জীবন

জীবন

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী 
 মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

জীবন তোমার রবের দেওয়া
অশেষ নিয়ামত,
সত্য পথে চললে তিনি
দেয় বরকত।

মিথ্যার পথে গেলে পাবে
ভ্রান্তি আর ক্ষয়,
রবের থেকে মুখ ফেরালে
নাই কারো আশ্রয়।

দুনিয়াটা এক পরীক্ষাগার,
কেটে যাবে দিন,
নেক আমলেই পার হবে
রেখো না তাই ঋণ।

তাওবা করে ফিরো পথে
নয় বেশি সময়,
সুযোগ মতো নাও চেয়ে
নিরব রাতে সেজদায়।

জীবন যেন যায় না বৃথা,
করো কিছু দান,
চলো তুমি সেই পথ ধরে—
যেখানে রহে ঈমান।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি মানুষের জীবনকে আল্লাহর দান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন—সত্য পথে চললে জীবন বরকতময় হয়, আর মিথ্যার পথে গেলে ক্ষতি ছাড়া কিছুই নেই। দুনিয়া হলো ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষা, যেখানে নেক আমল করাই মুক্তির উপায়। তাই সুযোগ থাকতে তওবা করতে হবে, দান–খয়রাত করতে হবে এবং ঈমানের পথে চলতে হবে—যেন জীবন বৃথা না যায়।

---
প্রথম স্তবক:
“জীবন তোমার রবের দেওয়া
অশেষ নিয়ামত,
সত্য পথে চললে তিনি
দেয় বরকত।”
👉 জীবন হলো আল্লাহর দেয়া এক অমূল্য নিয়ামত। যদি সত্য পথে চলা যায়, তবে আল্লাহর রহমত ও বরকত নেমে আসে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“মিথ্যার পথে গেলে পাবে
ভ্রান্তি আর ক্ষয়,
রবের থেকে মুখ ফেরালে
নাই কারো আশ্রয়।”
👉 যদি মিথ্যার পথে যাওয়া হয়, তবে তা ধ্বংস ও ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে কারো আশ্রয় পাওয়া সম্ভব নয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“দুনিয়াটা এক পরীক্ষাগার,
কেটে যাবে দিন,
নেক আমলেই পার হবে
রেখো না তাই ঋণ।”
👉 দুনিয়া হলো ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষা কেন্দ্র। একদিন এই জীবন শেষ হবে। তাই নেক আমলই মুক্তির একমাত্র পথ। পাপের ঋণ জমিয়ে রাখা উচিত নয়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“তাওবা করে ফিরো পথে
নয় বেশি সময়,
সুযোগ মতো নাও চেয়ে
নিরব রাতে সেজদায়।”
👉 দেরি না করে তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরতে হবে। কারণ সময় সীমিত। রাতের নিরব মুহূর্তে সেজদায় কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“জীবন যেন যায় না বৃথা,
করো কিছু দান,
চলো তুমি সেই পথ ধরে—
যেখানে রহে ঈমান।। ”
👉 কবি উপদেশ দিচ্ছেন—জীবন বৃথা যেন না যায়। আল্লাহর পথে দান-খয়রাত করতে হবে এবং সেই পথেই চলতে হবে যেখানে ঈমান টিকে থাকে।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতায় কবি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—জীবন হলো রবের দেয়া একটি অমূল্য সুযোগ। এই জীবনের উদ্দেশ্য হলো সত্য পথে চলা, নেক আমল করা, তওবা ও দান-খয়রাতের মাধ্যমে ঈমানকে অটুট রাখা। তাহলেই জীবন হবে সফল, অন্যথায় তা বৃথা হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫

শুভাকাঙ্ক্ষী

শুভাকাঙ্ক্ষী
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

তোমার আমার শুভাকাঙ্ক্ষী
আছে অনেক ভাই,
তাদের ভালোবাসা পেয়ে
হৃদয় ভরে যায়।

কারো সাথে পথ চলেছি
ভালোবাসার টানে,
কারো চোখে মমতা ছিল
নিঃস্বার্থ প্রাণখানে।

তারা সবাই থাকলে দূরেও
ভোলে না এই মন,
তারাই আমার আপন,
তারাই প্রিয় জন।

তাদের তরেই দোয়া করি
নীরব রাতে উঠে,
রব, তুমি হেফাজত করো,
চাই না পাপের ছিঁটে।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি তার জীবনের প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষীদের কথা বলেছেন। যারা তাকে ভালোবাসে, পাশে থেকেছে কিংবা দূরে থেকেও আন্তরিক স্নেহ দিয়েছে—তারা-ই তার আসল আপনজন। কবি তাদের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং আল্লাহর কাছে তাদের হেফাজত প্রার্থনা করেছেন।

---
প্রথম স্তবক:
“তোমার আমার শুভাকাঙ্ক্ষী
আছে অনেক ভাই,
তাদের ভালোবাসা পেয়ে
হৃদয় ভরে যায়।”
👉 কবি জানাচ্ছেন, আমাদের জীবনে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী থাকে। তাদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় হৃদয় ভরে ওঠে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“কারো সাথে পথ চলেছি
ভালোবাসার টানে,
কারো চোখে মমতা ছিল
নিঃস্বার্থ প্রাণখানে।”
👉 কেউ ভালোবাসার সম্পর্কে কাছে এসেছে, কেউ বা নিঃস্বার্থ মমতা দেখিয়েছে। এভাবেই শুভাকাঙ্ক্ষীরা জীবনের অংশ হয়ে থাকে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“তারা সবাই থাকলে দূরেও
ভোলে না এই মন,
তারাই আমার আপন,
তারাই প্রিয় জন।”
👉 দূরে থাকলেও তাদের স্মৃতি ও ভালোবাসা ভোলা যায় না। তারাই আসল আপনজন, তারাই প্রকৃত প্রিয়জন।
---
চতুর্থ স্তবক:
“তাদের তরেই দোয়া করি
নীরব রাতে উঠে,
রব, তুমি হেফাজত করো,
চাই না পাপের ছিঁটে।। ”
👉 কবি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন—যেন তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সর্বদা হেফাজতে থাকে, আর কোনো পাপ তাদের ছুঁতে না পারে।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতায় কবি জীবনের প্রকৃত সম্পর্কগুলিকে মূল্যায়ন করেছেন। তিনি শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা ও স্নেহকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে আল্লাহর কাছে তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা করেছেন।

বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

দেখে সবাই একই দৃশ্য,
ভাবনায় নেই মিল,
কারো চোখে স্বপ্ন জ্বলে,
কারো চোখে ঝিলমিল।

কেউ পায় সুখের ইঙ্গিত,
কেউ খোঁজে দোষ,
কেউ বোঝে হৃদয়বাণী,
কারো জ্বলে আফসোস।

ঘৃণার চোখে দেখলে সবই
লাগে কেবল কালো,
ভালোবাসার চোখে দেখো—
পাবে আশার আলো।

হিংসা খোঁজে অপবাদে,
ভালোবাসা চায় মন,
দৃষ্টিভঙ্গি বদলালেই
বদলে যায় জীবন।

তাই তো ভাবনা শুদ্ধ করো,
খুলে দাও অন্তর,
নিজের চোখেই বদলে যাবে
এই পৃথিবীর ঘর।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি দেখিয়েছেন যে একই জিনিস মানুষ ভিন্ন ভিন্ন চোখে দেখে। যার দৃষ্টিভঙ্গি যেমন, তার মনে প্রতিফলনও তেমন। কেউ ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীকে দেখে আশা খুঁজে পায়, আবার কেউ ঘৃণা ও হিংসার কারণে শুধু অন্ধকার দেখে। তাই কবি আহ্বান জানিয়েছেন—মনকে শুদ্ধ করো, দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাও; তাহলেই জীবন ও পৃথিবী বদলে যাবে।

---
প্রথম স্তবক:
“দেখে সবাই একই দৃশ্য,
ভাবনায় নেই মিল,
কারো চোখে স্বপ্ন জ্বলে,
কারো চোখে ঝিলমিল।”
👉 মানুষ সবাই একই জিনিস দেখে, কিন্তু ভাবনার ভিন্নতার কারণে অনুভূতি আলাদা হয়। কেউ আশা দেখে, কেউ আনন্দ খুঁজে পায়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“কেউ পায় সুখের ইঙ্গিত,
কেউ খোঁজে দোষ,
কেউ বোঝে হৃদয়বাণী,
কারো জ্বলে আফসোস।”
👉 কেউ সুখ ও ইতিবাচকতা খুঁজে পায়, কেউ আবার শুধু দোষ খোঁজে। কেউ অন্তরের বার্তা বোঝে, আবার কারো মনে আফসোস জ্বলে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“ঘৃণার চোখে দেখলে সবই
লাগে কেবল কালো,
ভালোবাসার চোখে দেখো—
পাবে আশার আলো।”
👉 ঘৃণা দিয়ে দেখলে সব কিছু অন্ধকার লাগে। কিন্তু ভালোবাসার চোখে পৃথিবী আলো আর আশায় ভরে ওঠে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“হিংসা খোঁজে অপবাদে,
ভালোবাসা চায় মন,
দৃষ্টিভঙ্গি বদলালেই
বদলে যায় জীবন।”
👉 হিংসা শুধু অন্যায় আর অপবাদ খুঁজে, কিন্তু ভালোবাসা মন খোঁজে। আর যদি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো যায়, তবে জীবনই বদলে যায়।
---
পঞ্চম স্তবক:
“তাই তো ভাবনা শুদ্ধ করো,
খুলে দাও অন্তর,
নিজের চোখেই বদলে যাবে
এই পৃথিবীর ঘর।। ”
👉 কবি উপদেশ দিচ্ছেন—ভাবনা পরিষ্কার করো, হৃদয় খুলো। দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে তোমার চোখেই পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠবে।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—পৃথিবীকে যেমনভাবে দেখা হয়, সেটাই আমাদের মনে প্রতিফলিত হয়। তাই দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হলে জীবনও সুন্দর হয়।

মনের জং

মনের জং
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

মনে যদি জং ধরে যায়
হৃদয় হবে কালো,
কেমন করে রাখবে তুমি
মনটাকে ভালো?

অভিমান আর হিংসার তোমার
হৃদয় কুরে খায়,
দুঃখে ভরে মনটা তখন
ভালবাসা মুছে যায়।

অসৎ ভাবনা তোমার আমার
হৃদয় করে ভার,
ভালো স্বপ্ন দেখতে হলে
মন করো পরিষ্কার।

ক্ষমার বাতাসে, মমতার রৌদ্রে
মরিচা করো দূর,
দেখবে তখন জীবন হবে
ভালোবাসায় ভরপুর।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি মানুষের অন্তরের দূষণ বা খারাপ চিন্তার কথা বলেছেন। অভিমান, হিংসা, অসৎ চিন্তা—এসব মনকে মরিচার মতো গ্রাস করে, যার ফলে ভালোবাসা ও শান্তি মুছে যায়। তাই কবি বলেছেন, ক্ষমা ও মমতার আলোয় মনকে শুদ্ধ করতে হবে, তাহলেই জীবন ভরে উঠবে ভালোবাসায়।

---
প্রথম স্তবক:
“মনে যদি জং ধরে যায়
হৃদয় হবে কালো,
কেমন করে রাখবে তুমি
মনটাকে ভালো?”
👉 কবি প্রশ্ন তুলছেন—যদি মন খারাপ চিন্তা আর দূষণে ভরে যায়, তবে হৃদয় অন্ধকার হয়ে যাবে। তখন মনকে ভালো রাখা সম্ভব নয়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“অভিমান আর হিংসার তোমার
হৃদয় কুরে খায়,
দুঃখে ভরে মনটা তখন
ভালবাসা মুছে যায়।”
👉 অভিমান ও হিংসা মানুষের হৃদয়কে গ্রাস করে। তখন মন দুঃখে ভারী হয়ে যায়, আর ভালোবাসা হারিয়ে যায়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“অসৎ ভাবনা তোমার আমার
হৃদয় করে ভার,
ভালো স্বপ্ন দেখতে হলে
মন করো পরিষ্কার।”
👉 অসৎ চিন্তা মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। কিন্তু ভালো স্বপ্ন দেখতে চাইলে মনকে পরিষ্কার করতে হবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“ক্ষমার বাতাসে, মমতার রৌদ্রে
মরিচা করো দূর,
দেখবে তখন জীবন হবে
ভালোবাসায় ভরপুর।। ”
👉 কবি সমাধান দিচ্ছেন—ক্ষমা ও মমতা হলো সেই শক্তি, যা মনের মরিচা দূর করতে পারে। যখন মন পরিষ্কার হবে, তখন জীবন ভরে উঠবে ভালোবাসায়।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—অভিমান, হিংসা ও অসৎ চিন্তা দূর করে ক্ষমা ও মমতার মাধ্যমে মনকে শুদ্ধ করলে জীবন শান্তি ও ভালোবাসায় ভরে উঠবে।


মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫

ব্যক্তিত্ব

ব্যক্তিত্ব 
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

নিজস্বতা হারিয়ে গেলে
হারিয়ে যাবে সুখ,
পদে পদে ভাঙবে তখন
আশা ভরা বুক।

সাহস রেখে রাখো তুমি
ওদের চোখে চোখ,
ওরা জানুক তুমি সদা
সত্য পথের লোক।

ভিড়ের মাঝে গা ভাসালে
পাল্টে যাবে রঙ,
তোমার হারিয়ে যাবে ব্যক্তিত্ব
পড়বে শুধুই জং।

চলনে তাই থাক দৃঢ়তা,
বলনেও হোক বাঁধন,
ভিতর যত থাকবে সৎ
হবে ফুলের মতন। 

চেহারাতে যায় না চেনা 
ভেতরের ওই মন, 
ব্যক্তিত্ব গড়তে হলে 
আগে গড়ো এই জীবন ।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি ব্যক্তিত্বের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন—নিজস্বতা, সাহস, সত্যের প্রতি অটলতা, সৎ জীবনযাপন—এসবই ব্যক্তিত্ব গঠনের মূল উপাদান। বাহ্যিক চেহারার চেয়ে ভেতরের গুণই আসল পরিচয়।

---
প্রথম স্তবক:
“নিজস্বতা হারিয়ে গেলে
হারিয়ে যাবে সুখ,
পদে পদে ভাঙবে তখন
আশা ভরা বুক।”
👉 মানুষ যদি নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে, তবে সুখও হারিয়ে যায়। আশা ও আত্মবিশ্বাস ভেঙে পড়ে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“সাহস রেখে রাখো তুমি
ওদের চোখে চোখ,
ওরা জানুক তুমি সদা
সত্য পথের লোক।”
👉 ব্যক্তিত্ববান হতে হলে সত্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে। সাহস নিয়ে চোখে চোখ রেখে দাঁড়াতে হবে, যাতে মানুষ বোঝে—তুমি সত্যের পথে চলা একজন সৎ মানুষ।
---
তৃতীয় স্তবক:
“ভিড়ের মাঝে গা ভাসালে
পাল্টে যাবে রঙ,
তোমার হারিয়ে যাবে ব্যক্তিত্ব
পড়বে শুধুই জং।”
👉 ভিড়ের সঙ্গে ভেসে গেলে নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে যাবে। তখন তোমার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে, আর জীবনে মরিচা ধরবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“চলনে তাই থাক দৃঢ়তা,
বলনেও হোক বাঁধন,
ভিতর যত থাকবে সৎ
হবে ফুলের মতন।”
👉 তোমার আচরণে দৃঢ়তা থাকতে হবে, কথাতেও শৃঙ্খলা। অন্তরে সততা থাকলে জীবন ফুলের মতো সুন্দর হয়ে উঠবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“চেহারাতে যায় না চেনা
ভেতরের ওই মন,
ব্যক্তিত্ব গড়তে হলে
আগে গড়ো এই জীবন ।।”
👉 আসল ব্যক্তিত্ব চেহারায় নয়, হৃদয় ও জীবনের ভেতরে। তাই ব্যক্তিত্ব গড়তে হলে প্রথমে সৎ ও নৈতিক জীবন গড়তে হবে।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—সাহস, সত্যবাদিতা, সততা ও স্বকীয়তা ব্যক্তিত্বের আসল শক্তি। বাহ্যিক চেহারার নয়, বরং ভেতরের জীবনযাপনেই ব্যক্তিত্বের ভিত্তি গড়ে ওঠে।





ভদ্রতা

ভদ্রতা
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

ভদ্র ভাষায় কথা বলো,
গলে যাবে মন,
দূরের মানুষ বিভেদ ভুলে
হবে আপনজন।

নম্র আচরণে জয় করা যায়
হৃদয়ের রাজত্ব,
এই অহংকারে হারায় মানুষ
আপন ব্যক্তিত্ব।

কঠিন দিনেও হাসিমুখে
দিও তুমি বিদায়,
দেখবে তখন তোমার তরে
ওরাই দেবে হৃদয়।

এই দয়া, মায়া, ভালোবাসা —
ভদ্রতারই চিহ্ন,
এ সব কিছুই রব দিয়েছেন
মানুষেরই জন্য।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি ভদ্রতার মাহাত্ম্য তুলে ধরেছেন। ভদ্রতা মানুষকে একে অপরের কাছাকাছি আনে, সম্পর্ককে দৃঢ় করে। নম্রতা, ভালোবাসা, দয়া—এসব গুণই মানুষকে প্রকৃত অর্থে সুন্দর করে তোলে।

---
প্রথম স্তবক:
“ভদ্র ভাষায় কথা বলো,
গলে যাবে মন,
দূরের মানুষ বিভেদ ভুলে
হবে আপনজন।”
👉 ভদ্রভাবে কথা বললে কঠিন মনও নরম হয়ে যায়। ভদ্রতা মানুষের দূরত্ব ঘোচায়, অপরিচিতকেও আপন করে তোলে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“নম্র আচরণে জয় করা যায়
হৃদয়ের রাজত্ব,
এই অহংকারে হারায় মানুষ
আপন ব্যক্তিত্ব।”
👉 নম্রতা দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করা যায়। কিন্তু অহংকার মানুষের ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করে দেয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“কঠিন দিনেও হাসিমুখে
দিও তুমি বিদায়,
দেখবে তখন তোমার তরে
ওরাই দেবে হৃদয়।”
👉 জীবনের কষ্টেও যদি ভদ্রতা আর হাসিমুখ বজায় রাখা যায়, তবে মানুষ তোমাকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“এই দয়া, মায়া, ভালোবাসা —
ভদ্রতারই চিহ্ন,
এ সব কিছুই রব দিয়েছেন
মানুষেরই জন্য।। ”
👉 দয়া, মায়া ও ভালোবাসা ভদ্রতার প্রধান লক্ষণ। এগুলো স্রষ্টার দান, যা মানুষের জীবনে সৌন্দর্য যোগ করে।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—ভদ্রতা ও নম্রতা মানুষের আসল সৌন্দর্য। ভদ্র ব্যবহারে মন জয় হয়, সম্পর্ক দৃঢ় হয়, আর অহংকার শুধু মানুষকে একা করে দেয়।

সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

এসো দলবদ্ধ হই

এসো দলবদ্ধ হই 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

এসো দলবদ্ধ হই
শির রাখি উঁচু,
ঈমান জ্বালাই বুকে
কুদৃষ্টি করি নিঁচু।

এসো ত্যাগ করি গর্ব,
শিখি নম্র ভাষা,
ভ্রাতৃত্বেই গড়ি সমাজ,
ছড়িয়ে দিই ভালোবাসা।

এসো সত্য কথা বলি,
মিথ্যা পদদলি,
ফুলের মতো সমাজটাকে
সঙ্গে নিয়ে চলি।

এসো জীবনটাকে রবের ভয়ে
গড়ি বিধান মেনে,
বিনিময়ে নিই চলো
ওই জান্নাত কিনে।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি মানুষকে একত্রিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ভ্রাতৃত্ব, সত্য, নম্রতা ও ঈমানের শক্তিতেই সমাজ সুন্দর হয় এবং রবের বিধান মেনে চললে জান্নাত অর্জন সম্ভব।

---
প্রথম স্তবক:
“এসো দলবদ্ধ হই
শির রাখি উঁচু,
ঈমান জ্বালাই বুকে
কুদৃষ্টি করি নিঁচু।”
👉 কবি আহ্বান করছেন—ঐক্যবদ্ধ হয়ে আত্মমর্যাদা বজায় রাখতে হবে। হৃদয়ে ঈমানের আলো জ্বালাতে হবে এবং খারাপ দৃষ্টি ও চিন্তা দূরে রাখতে হবে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“এসো ত্যাগ করি গর্ব,
শিখি নম্র ভাষা,
ভ্রাতৃত্বেই গড়ি সমাজ,
ছড়িয়ে দিই ভালোবাসা।”
👉 গর্ব-অহংকার ত্যাগ করে ভদ্রতা শিখতে হবে। ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ গড়ে উঠবে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“এসো সত্য কথা বলি,
মিথ্যা পদদলি,
ফুলের মতো সমাজটাকে
সঙ্গে নিয়ে চলি।”
👉 সত্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে এবং মিথ্যাকে পরাভূত করতে হবে। তবেই সমাজ ফুলের মতো সুন্দর ও নির্মল হবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“এসো জীবনটাকে রবের ভয়ে
গড়ি বিধান মেনে,
বিনিময়ে নিই চলো
ওই জান্নাত কিনে।। ”
👉 জীবনে স্রষ্টার ভয় ও বিধান মান্য করে চলতে হবে। এর বিনিময়ে জান্নাত পাওয়া যাবে, সেটাই চূড়ান্ত সফলতা।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতা মানুষের কাছে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, নম্রতা, সত্যনিষ্ঠা ও আল্লাহভীতির বার্তা দেয়। এগুলিই একটি সুন্দর সমাজ ও চিরন্তন মুক্তির পথ।


শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

হাসিখুশি

হাসিখুশি
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

হাসিমুখে বলো কথা,
গলে যাবে মন,
কঠিন দিনও হাসে তখন—
ফুটে উঠুক বন।

মধুর ভাষা, কোমল চোখ—
ভরিয়ে দেয় প্রাণ,
নরম হাসি ছড়িয়ে দেয়
ফুলের মতো ঘ্রাণ।

রাগ-ক্ষোভের দেয়াল ভেঙে
গড়ো ভালোবাসা,
হাসিখুশি জীবন হলে
পাবে শান্তি-আশা।

যেখানে আছে হাসিমুখ,
সেখানে ঝরে শান্তি,
হৃদয় জয় হলে তবে
ঘুচে যাবে ক্লান্তি।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি বলেছেন—হাসিমুখ শুধু নিজের জীবন নয়, অন্যের জীবনকেও আলোকিত করে। হাসি মন জয় করে, দুঃখ-দুর্দশা ভুলিয়ে দেয় এবং শান্তি-ভালোবাসার পরিবেশ সৃষ্টি করে। 

---
প্রথম স্তবক:
“হাসিমুখে বলো কথা,
গলে যাবে মন,
কঠিন দিনও হাসে তখন—
ফুটে উঠুক বন।”
👉 হাসিমুখে কথা বললে মানুষের মন সহজেই জিতে নেওয়া যায়। কঠিন সময়ও তখন আনন্দে ভরে ওঠে, ঠিক যেন শুষ্ক বনে ফুল ফুটে ওঠে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“মধুর ভাষা, কোমল চোখ—
ভরিয়ে দেয় প্রাণ,
নরম হাসি ছড়িয়ে দেয়
ফুলের মতো ঘ্রাণ।”
👉 মধুর কথা আর কোমল দৃষ্টি মানুষের হৃদয় প্রশান্ত করে। নরম হাসি যেন ফুলের ঘ্রাণের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যা সবার মনকে প্রফুল্ল করে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“রাগ-ক্ষোভের দেয়াল ভেঙে
গড়ো ভালোবাসা,
হাসিখুশি জীবন হলে
পাবে শান্তি-আশা।”
👉 হাসি রাগ ও ক্ষোভের প্রাচীর ভেঙে দেয়। জীবনে আনন্দ থাকলে তা ভালোবাসা ও শান্তির পথ খুলে দেয়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“যেখানে আছে হাসিমুখ,
সেখানে ঝরে শান্তি,
হৃদয় জয় হলে তবে
ঘুচে যাবে ক্লান্তি।। ”
👉 যেখানে হাসিমুখ থাকে, সেখানে শান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। হৃদয় জয় হলে জীবনের দুঃখ ও ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—হাসি হলো জীবনের শক্তি। এটি দুঃখ-দুর্দশা দূর করে, মানুষকে কাছে আনে এবং ভালোবাসা ও শান্তিতে ভরিয়ে তোলে।

শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

নিরহংকার মানুষগুলো

নিরহংকার মানুষগুলো 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

নিরহংকার মানুষগুলো
চুপেই থাকে বেশ,
নিজে হারে, তবু কারো
করে না তো রেষ।

চোখে তাদের শান্ত আলো,
বুকে মমতা রয়,
তাদের পাশে থাকলে যেন
হৃদয়’টা জুড়ায়।

চায় না কোনো বাহবা পেতে,
হয় নাকো দাম্ভিক,
ভদ্রতায়ই জয় করে সব,
হয় আন্তরিক।

সত্য পথেই থাকে দৃঢ়,
ভালোবাসায় ভরে বুক,
এমনই মানুষ ভোগ করে ভাই
রবের দেওয়া সুখ।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি বিনয়ী ও নিরহংকার মানুষের চরিত্র বর্ণনা করেছেন। তারা বাহ্যিক বড়াই না করে নীরব থেকেও নিজের মহত্ত্ব প্রকাশ করে। এমন মানুষই সত্যিকার অর্থে হৃদয় জয় করে এবং আল্লাহর (রবের) দেওয়া শান্তি উপভোগ করে।

---
প্রথম স্তবক:
“নিরহংকার মানুষগুলো
চুপেই থাকে বেশ,
নিজে হারে, তবু কারো
করে না তো রেষ।”
👉 বিনয়ী মানুষ অহংকার করে না। তারা নীরব থেকে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতায় হারলেও কারো প্রতি বিদ্বেষ বা রেষারেষি পোষণ করে না।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“চোখে তাদের শান্ত আলো,
বুকে মমতা রয়,
তাদের পাশে থাকলে যেন
হৃদয়’টা জুড়ায়।”
👉 এই মানুষগুলোর চোখে থাকে শান্তির দীপ্তি এবং হৃদয়ে থাকে অশেষ মমতা। তাদের সান্নিধ্যে মানুষের মনে প্রশান্তি ও স্বস্তি জন্মায়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“চায় না কোনো বাহবা পেতে,
হয় নাকো দাম্ভিক,
ভদ্রতায়ই জয় করে সব,
হয় আন্তরিক।”
👉 তারা প্রশংসা বা বাহবা চায় না, দাম্ভিকতা করে না। বরং ভদ্রতা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে নেয়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“সত্য পথেই থাকে দৃঢ়,
ভালোবাসায় ভরে বুক,
এমনই মানুষ ভোগ করে ভাই
রবের দেওয়া সুখ।। ”
👉 এরা সর্বদা সত্যের পথে অটল থাকে এবং হৃদয় ভালোবাসায় পূর্ণ রাখে। তাই তারা আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত সুখ উপভোগ করতে পারে।

---
👉 সারকথা:
কবি বলতে চেয়েছেন—নিরহংকার, ভদ্র ও সত্যবাদী মানুষরাই প্রকৃত শান্তির অধিকারী। তারা বিদ্বেষ এড়িয়ে ভালোবাসা দিয়ে জীবনকে সুন্দর করে তোলে।





বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

প্রতিহিংসা

প্রতিহিংসা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

প্রতিহিংসা বুকে পুষে,
কি-ই বা লাভ হয়?
নিজেই জ্বলে প্রতিদিন,
চোখে নামে ক্ষয়।

কষ্ট দিলে কষ্ট পাবে,
এ কথা নয় ভুল,
জেনে রেখো বদলা নিলে
দিতে হয় মাশুল।

রেগে গেলে জ্বলে প্রাণ,
শান্তি যায় দূরে,
ক্ষমা দিলে ভালোবাসা
আসে প্রতি ঘরে।

নরম ভাষা, শান্ত মন,
আনে হৃদয় জয়,
প্রতিহিংসা ছেড়ে দিলে
পাওয়া যায় পরিচয়।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি প্রতিহিংসার অপকারিতা ও ক্ষমাশীলতার মহত্ত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বুঝিয়েছেন, প্রতিহিংসা হৃদয়কে শান্তি থেকে বঞ্চিত করে আর ক্ষমা মানুষকে ভালোবাসা ও প্রকৃত পরিচয় এনে দেয়।

---
প্রথম স্তবক:
“প্রতিহিংসা বুকে পুষে,
কি-ই বা লাভ হয়?
নিজেই জ্বলে প্রতিদিন,
চোখে নামে ক্ষয়।”
👉 প্রতিহিংসা হৃদয়ে জমা করলে কোনো লাভ হয় না। এতে অন্যকে নয়, বরং নিজেকেই প্রতিদিন জ্বালা-যন্ত্রণা ও ক্ষয়ের মধ্যে পড়তে হয়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“কষ্ট দিলে কষ্ট পাবে,
এ কথা নয় ভুল,
জেনে রেখো বদলা নিলে
দিতে হয় মাশুল।”
👉 অন্যকে কষ্ট দিলে তার ফল ভোগ করতেই হবে। তবে প্রতিশোধ নিলে শান্তি মেলে না, বরং এর জন্য বড় মূল্য বা মাশুল দিতে হয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“রেগে গেলে জ্বলে প্রাণ,
শান্তি যায় দূরে,
ক্ষমা দিলে ভালোবাসা
আসে প্রতি ঘরে।”
👉 রাগে হৃদয় জ্বলে উঠে, তখন শান্তি দূরে সরে যায়। কিন্তু যদি ক্ষমা করা যায়, তবে ভালোবাসা ও আনন্দ প্রতিটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“নরম ভাষা, শান্ত মন,
আনে হৃদয় জয়,
প্রতিহিংসা ছেড়ে দিলে
পাওয়া যায় পরিচয়।। ”
👉 কোমল কথা আর শান্ত মন মানুষকে জয় করতে পারে। প্রতিহিংসা ত্যাগ করলে সত্যিকার ব্যক্তিত্ব ও মানবিক পরিচয় অর্জন করা যায়।

---
সারকথা:
কবি বোঝাতে চেয়েছেন—প্রতিহিংসা মানুষকে পোড়ায়, শান্তি কেড়ে নেয়; আর ক্ষমাশীলতা ও নরম স্বভাবই মানুষকে ভালোবাসা ও সত্য পরিচয় দেয়।

কুধারণার কুফল

কুধারণার কুফল 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

মুখের বুলি ফাটায় বোমা,
বিষবাষ্প সব বুকে জমা।
সত্যটাকে না কেউ বোঝে,
দূরবীন দিয়ে দোষটি খোঁজে।

শুনে রাখে অর্ধেক কথা,
বুঝে না সে কিসে ব্যথা।
যা হয়নি তাও বানায়,
মনের ভেতর আগুন ছড়ায়।

রাগে ভরে চোখের পানি,
দূরে ঠেলে আত্মীয় জানি।
একটু কথায় ভাঙে মন,
হারায় হৃদয়–বন্ধন।

কুধারণা বিষের মতো,
ঘুণে খায় হৃদয় যতো।
সচেতন হও আজই তুমি,
ভুলে দাও সে কুসম্ভ্রমই।

সত্য বলো, বুঝে চলো,
বিশ্বাসের ওই আলো জ্বালো।
মিষ্টি ভাষা, ভালো মন,
এসেই যাবে আপনজন।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি ভুল ধারণা বা নেতিবাচক ভাবনার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, সন্দেহ, অর্ধসত্য কথা আর কুধারণা মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়, সম্পর্ক ভেঙে দেয় এবং হৃদয়কে বিষের মতো গ্রাস করে। তাই সত্য বুঝে কথা বলা, বিশ্বাস রাখা এবং ভালো ব্যবহারই শান্তি আনে।

---
প্রথম স্তবক:
“মুখের বুলি ফাটায় বোমা,
বিষবাষ্প সব বুকে জমা।
সত্যটাকে না কেউ বোঝে,
দূরবীন দিয়ে দোষটি খোঁজে।”
👉 অনেকেই মুখের কথায় এমন আচরণ করে যেন বোমা ফাটছে। বুকে জমে থাকা রাগ–বিষ মানুষকে সত্য বোঝতে বাধা দেয়। তারা ভালো দিক দেখার বদলে দূরবীন দিয়ে শুধু দোষ খুঁজতে থাকে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“শুনে রাখে অর্ধেক কথা,
বুঝে না সে কিসে ব্যথা।
যা হয়নি তাও বানায়,
মনের ভেতর আগুন ছড়ায়।”
👉 মানুষ যখন অর্ধেক কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেয়, তখন ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে। যেটা ঘটেনি, সেটাই গড়ে তোলে গুজবের মতো। আর এভাবে মনের মধ্যে আগুন জ্বলে উঠে, শান্তি নষ্ট হয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“রাগে ভরে চোখের পানি,
দূরে ঠেলে আত্মীয় জানি।
একটু কথায় ভাঙে মন,
হারায় হৃদয়–বন্ধন।”
👉 কুধারণা রাগ বাড়ায়, কান্না ডেকে আনে। এতে আত্মীয়তা দূরে সরে যায়। সামান্য কথাতেই মন ভেঙে যায়, প্রিয়জনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে পড়ে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“কুধারণা বিষের মতো,
ঘুণে খায় হৃদয় যতো।
সচেতন হও আজই তুমি,
ভুলে দাও সে কুসম্ভ্রমই।”
👉 কুধারণা আসলে বিষের মতো। এটি ধীরে ধীরে মনকে ঘুণে খাওয়া কাঠের মতো নষ্ট করে। তাই আজ থেকেই সচেতন হতে হবে এবং এই ভ্রান্ত ধারণা ত্যাগ করতে হবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“সত্য বলো, বুঝে চলো,
বিশ্বাসের ওই আলো জ্বালো।
মিষ্টি ভাষা, ভালো মন,
এসেই যাবে আপনজন।। ”
👉 সত্য কথা বলা, ভেবেচিন্তে চলা এবং বিশ্বাসের আলো জ্বালানোই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার উপায়। মিষ্টি ভাষা আর ভালো মন দিয়ে মানুষকে সহজেই আপন করা যায়।

---
সারকথা:
কবি বোঝাতে চেয়েছেন—কুধারণা সম্পর্ক ভেঙে দেয়, হৃদয়কে বিষিয়ে তোলে; কিন্তু সত্য, বিশ্বাস, মধুর কথা আর ভালো মন মানুষকে এক করে, হৃদয় জয় করে। 

আমার কবিতা

আমার কবিতা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

আমার কবিতা হাসে-কাঁদে,
আলো-আঁধার খেলে,
রঙ মিশে যায় জীবনধারায়
এই কাব্যের ঢেলে।

আমার কবিতা বলে চলে
সত্য, সাহস, স্বপ্ন,
মনের কোণে গোপন রাখা
আশা জাগায় যত্ন।

আমার কবিতা ন্যায়ের ভাষায়
জাগায় সুপ্ত প্রাণ,
ভালোবাসা, শান্তির আলো
বয়ে আনে দান।

আমার কবিতা জেগে থাকে
নীরব রাতের বুকে,
জুলুম দেখলে জ্বলে ওঠে,
অন্যায় দেয় রুখে।

কলম ধরি, নিজস্ব ভাষায়
লিখি শত ব্যথা,
আমি নই, আমার কবিতা—
প্রকাশ করে সব কথা।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি তার কবিতার বৈশিষ্ট্য ও ভূমিকা ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতা তার কাছে শুধু শব্দের খেলা নয়; বরং সত্য, সাহস, ন্যায়, ভালোবাসা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা। কবির ব্যক্তিগত অনুভূতি, বেদনা, আশা আর সংগ্রাম কবিতার ভেতর দিয়েই প্রকাশ পায়।

---
প্রথম স্তবক:
“আমার কবিতা হাসে-কাঁদে,
আলো-আঁধার খেলে,
রঙ মিশে যায় জীবনধারায়
এই কাব্যের ঢেলে।”
👉 কবি বোঝাচ্ছেন—তার কবিতা জীবনের মতোই কখনো আনন্দে ভরে ওঠে, কখনো দুঃখে। আলো-আঁধারের খেলায় যেমন জীবন এগিয়ে চলে, তেমনি কবিতাতেও জীবনের সব রঙ মিশে আছে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“আমার কবিতা বলে চলে
সত্য, সাহস, স্বপ্ন,
মনের কোণে গোপন রাখা
আশা জাগায় যত্ন।”
👉 কবিতার মাধ্যমে তিনি সত্য ও সাহসের কথা বলেন, স্বপ্ন দেখান। যে আশা গোপনে মনে থাকে, কবিতা সেটিকে যত্নসহকারে জাগিয়ে তোলে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“আমার কবিতা ন্যায়ের ভাষায়
জাগায় সুপ্ত প্রাণ,
ভালোবাসা, শান্তির আলো
বয়ে আনে দান।”
👉 কবিতার কাজ শুধু প্রকাশ নয়, জাগরণও। এটি ন্যায়ের পক্ষে মানুষকে জাগিয়ে তোলে। ভালোবাসা আর শান্তির আলো ছড়িয়ে সমাজে দান করে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“আমার কবিতা জেগে থাকে
নীরব রাতের বুকে,
জুলুম দেখলে জ্বলে ওঠে,
অন্যায় দেয় রুখে।”
👉 কবিতার এক দিক শান্ত, নিরিবিলি রাতের মতো। আবার অন্যায় বা জুলুম দেখলে এটি প্রতিবাদের আগুন হয়ে ওঠে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“কলম ধরি, নিজস্ব ভাষায়
লিখি শত ব্যথা,
আমি নই, আমার কবিতা—
প্রকাশ করে সব কথা।। ”
👉 কবি বলছেন, তিনি নিজের কণ্ঠে নয়, বরং কবিতার কণ্ঠে কথা বলেন। কবিতাই তার অনুভূতি, কষ্ট, বেদনা, আশা ও প্রতিবাদ প্রকাশ করে।

---
সারকথা:
কবি এখানে তার কবিতাকে জীবনের প্রতিচ্ছবি, সত্য-ন্যায়ের কণ্ঠস্বর এবং ভালোবাসা ও শান্তির বাহক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। 
কবিতা তার নিজের আত্মার প্রতিধ্বনি—যেখানে তিনি হাসেন, কাঁদেন, প্রতিবাদ করেন এবং ভালোবাসা বিলিয়ে দেন। 

কলম চলুক সত্যের পথে

কলম চলুক সত্যের পথে
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

কলম চলুক সত্যের পথে,
মিথ্যা হোক পরাজয়,
আলো ছড়াক শব্দ দিয়ে—
পাপে মন না ভরায়।

রবের নামে উঠুক আওয়াজ,
অন্ধকার হোক ভাঙা,
ন্যায়ের পক্ষে বলুক কলম—
না হয় দুনিয়া রাঙা।

ভয়কে করে পদদলিত,
জুলুমের দেয় জবাব,
দীন ও ন্যায়ের বার্তা নিয়ে
কলম রাখে হিসাব।

যে কলম চলে জ্ঞান-কথায়,
হক্‌ কথা সবার চিত্তে,
সে-ই কলম রবের রহম
ছড়িয়ে দেয় দিক দিকেতে।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি কলমকে সত্য ও ন্যায়ের পথের যোদ্ধা হিসেবে তুলে ধরেছেন। কলম যেন মিথ্যা ও জুলুমের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে এবং মানুষের মনে আলো ও জ্ঞানের দিশা ছড়িয়ে দেয়। কবি বিশ্বাস করেন—যে কলম সত্য কথা লিখে, জ্ঞান ও ন্যায়ের প্রচার করে, সেটিই রবের রহমতের মাধ্যম হয়ে ওঠে।

---
প্রথম স্তবক:
“কলম চলুক সত্যের পথে,
মিথ্যা হোক পরাজয়,
আলো ছড়াক শব্দ দিয়ে—
পাপে মন না ভরায়।”
👉 কলম যেন সত্য প্রকাশ করে, মিথ্যা যেন হেরে যায়। শব্দের আলোতে অন্ধকার দূর হয়, আর পাপ যেন মানুষের মন দখল করতে না পারে—এই কামনা কবি করেছেন।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“রবের নামে উঠুক আওয়াজ,
অন্ধকার হোক ভাঙা,
ন্যায়ের পক্ষে বলুক কলম—
না হয় দুনিয়া রাঙা।”
👉 কলম যেন সর্বদা রবের নাম স্মরণ করে, অন্ধকারকে ভেঙে দেয় এবং ন্যায়ের পক্ষে আওয়াজ তোলে। এইভাবে পৃথিবী সুন্দর ও আলোকিত হয়ে উঠবে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“ভয়কে করে পদদলিত,
জুলুমের দেয় জবাব,
দীন ও ন্যায়ের বার্তা নিয়ে
কলম রাখে হিসাব।”
👉 কলম ভয়কে পদদলিত করে সাহসের প্রতীক হয়। এটি অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। দীন (ধর্ম) ও ন্যায়ের বার্তা মানুষকে পৌঁছে দেয় এবং সবকিছুর হিসাব রাখে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“যে কলম চলে জ্ঞান-কথায়,
হক্‌ কথা সবার চিত্তে,
সে-ই কলম রবের রহম
ছড়িয়ে দেয় দিক দিকেতে।। ”
👉 যে কলম জ্ঞান ও সত্যের কথা প্রচার করে এবং মানুষের মনে হক্ (ন্যায় ও সত্য) কথা জাগিয়ে তোলে, সেই কলমই আসলে রবের রহমত ছড়িয়ে দেয় চারদিকে।

---
সারকথা / মূল ভাব:
কবি কলমকে মিথ্যা, অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে এক অদম্য শক্তি হিসেবে দেখিয়েছেন। কলম সত্য, ন্যায়, জ্ঞান ও আলোর বার্তা বহন করলে তা রবের রহমতের দরজা খুলে দেয়। 




বিশ্বাস

কবিতা: বিশ্বাস 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা ) 

বিশ্বাস মানে অন্ধ নয়,
সত্য জানার পথ,
যে খোঁজে আলোর ঠিকানা,
সে-ই পায় সঠিক জগৎ।

বিশ্বাস মানে শান্ত আশা,
ভরসায় ভরা মন,
রবের নামে রাখে ভরসা,
চায় না দুনিয়ার ধন।

বিশ্বাস মানে ভালোবাসা,
সত্‍‌ পথে থাকা,
মিথ্যা ছেড়ে সত্য ধরার
অঙ্গীকারেই ঢাকা।

বিশ্বাস মানে ধৈর্য রাখা
দুঃখ-কষ্টে ভাই,
রবের রহম যার সহায়,
সে-ই শান্তি পাই।

বিশ্বাস মানে সাহস জোগায়
সত্য পথে চলা,
রবের উপর ভরসা রেখে
অন্তর রাখো খোলা।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি দেখিয়েছেন—বিশ্বাস মানে অন্ধ অনুসরণ নয়, বরং সত্য ও ন্যায় খোঁজার আলোকিত পথ। বিশ্বাস মানুষকে শান্তি, ভরসা, সাহস ও ভালোবাসার শিক্ষা দেয়। প্রকৃত বিশ্বাস হলো আল্লাহর ওপর নির্ভরশীলতা, ধৈর্য ধরা, এবং মিথ্যা ছেড়ে সত্যের পথে চলা।

---
প্রথম স্তবক:
“বিশ্বাস মানে অন্ধ নয়,
সত্য জানার পথ,
যে খোঁজে আলোর ঠিকানা,
সে-ই পায় সঠিক জগৎ।”
👉 এখানে কবি বোঝাচ্ছেন—বিশ্বাস মানে অন্ধভাবে কিছু মেনে নেওয়া নয়। বরং সত্যের অনুসন্ধান করা এবং আলোর দিশা খোঁজা। যে খোঁজে, সেই-ই সত্যিকারের জগৎ লাভ করে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“বিশ্বাস মানে শান্ত আশা,
ভরসায় ভরা মন,
রবের নামে রাখে ভরসা,
চায় না দুনিয়ার ধন।”
👉 প্রকৃত বিশ্বাস মানে হলো—আশা ও শান্তিতে ভরা মন। বিশ্বাসী মানুষ দুনিয়ার ধন-সম্পদ চায় না, বরং আল্লাহর ওপর ভরসা করে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“বিশ্বাস মানে ভালোবাসা,
সত্‍‌ পথে থাকা,
মিথ্যা ছেড়ে সত্য ধরার
অঙ্গীকারেই ঢাকা।”
👉 বিশ্বাস হলো ভালোবাসার প্রতীক। এটি মানুষকে সত্য পথে থাকতে শেখায়। মিথ্যা ত্যাগ করে সত্যকে আঁকড়ে ধরা—এটাই প্রকৃত বিশ্বাস।
---
চতুর্থ স্তবক:
“বিশ্বাস মানে ধৈর্য রাখা
দুঃখ-কষ্টে ভাই,
রবের রহম যার সহায়,
সে-ই শান্তি পাই।”
👉 বিশ্বাস মানে কষ্টের সময় ধৈর্য ধারণ করা। যে মানুষ আল্লাহর রহমতের ওপর নির্ভর করে, সেই-ই প্রকৃত শান্তি লাভ করে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“বিশ্বাস মানে সাহস জোগায়
সত্য পথে চলা,
রবের উপর ভরসা রেখে
অন্তর রাখো খোলা।”
👉 বিশ্বাস সাহস জোগায়—সত্য পথে চলার জন্য। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে মনকে প্রশান্ত ও খোলা রাখাই প্রকৃত ঈমানদারের কাজ।

---
সারকথা / মূল ভাব:
বিশ্বাস মানে হলো—সত্যকে গ্রহণ করা, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা, কষ্টে ধৈর্য ধরা এবং সাহস নিয়ে সত্যের পথে হাঁটা। বিশ্বাস মানুষকে শান্তি, আশা, ভালোবাসা ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করে। 🌸

বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

আত্মবিশ্বাস

আত্মবিশ্বাস 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

আত্মবিশ্বাসে গড়ে ওঠো ভাই
মানুষ হও খাঁটি,
ভরসা রাখো নিজের ওপর
পাবে সফলতার চাবিকাঠি।

পদে পদে আসবে বাধা,
তবু চলতে হবে পথ,
এখনি তোমার গড়তে হবে
আগামীর ভবিষ্যত।

ভয়-শঙ্কা ভুলে চলো
সত্যেই রাখো চোখ,
আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে দেবে
সাহস, শক্তি, সুখ।

হে তরুণ, জাগো এবার
গড়ো নিজের গল্প,
নয় বেশি নয় হাতে তোমার
সময় খুবই অল্প।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি তরুণ সমাজকে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন—জীবনের প্রতিটি সংগ্রামে আত্মবিশ্বাস, সত্যের প্রতি অঙ্গীকার এবং অধ্যবসায়ই সাফল্যের চাবিকাঠি। ভয় নয়, দৃঢ় মনোভাবই মানুষকে তার ভবিষ্যত গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

---
প্রথম স্তবক:
“আত্মবিশ্বাসে গড়ে ওঠো ভাই
মানুষ হও খাঁটি,
ভরসা রাখো নিজের ওপর
পাবে সফলতার চাবিকাঠি।”
👉 এখানে কবি বলেছেন—সত্যিকারের মানুষ হতে হলে আত্মবিশ্বাস সবচেয়ে জরুরি। নিজের ওপর ভরসা রাখলেই জীবনে সাফল্য অর্জন সম্ভব।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“পদে পদে আসবে বাধা,
তবু চলতে হবে পথ,
এখনি তোমার গড়তে হবে
আগামীর ভবিষ্যত।”
👉 জীবনের পথে নানারকম বাধা আসবেই। কিন্তু সাহস নিয়ে পথ চলতে হবে। আজকের সংগ্রামই আগামীর সুন্দর ভবিষ্যতের ভিত্তি।
---
তৃতীয় স্তবক:
“ভয়-শঙ্কা ভুলে চলো
সত্যেই রাখো চোখ,
আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে দেবে
সাহস, শক্তি, সুখ।”
👉 ভয় বা শঙ্কা ত্যাগ করে সত্যের পথে অটল থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাস মানুষকে শক্তি, সাহস এবং মানসিক প্রশান্তি দেয়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“হে তরুণ, জাগো এবার
গড়ো নিজের গল্প,
নয় বেশি নয় হাতে তোমার
সময় খুবই অল্প।। ”
👉 কবি তরুণদের জাগাতে চাইছেন। সময় অল্প, তাই দেরি না করে এখন থেকেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজের জীবনের গল্প গড়ে তোলা জরুরি।

---
সারকথা:
এই কবিতার মূল বার্তা হলো—আত্মবিশ্বাস হলো সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। ভয় নয়, সত্য ও অধ্যবসায়ের সাথে এগোলে তরুণ প্রজন্ম ভবিষ্যতের সমাজ গড়ে তুলতে পারবে।



মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

জুলাইয়ের সেই দিনটা

জুলাইয়ের সেই দিনটা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (কোলকাতা) 

মুখরিকা: 

জুলাইয়ের সেই দিনটা
স্মরণ করতে চাই,
ফ্যাসিবাদের এই বাংলায়
নাই কোনো ঠাঁই নাই। 
--- 
✦ ১ম অন্তরা:

ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে
লিখেছিল যে গান,
ভয়ে তবু কণ্ঠ থামে না,
চায় ন্যায়েরই মান।
সেই সাহসের উত্তরাধিকার —
শপথে আবার চাই।
ফ্যাসিবাদের এই বাংলায়
নাই কোনো ঠাঁই নাই।
জুলাইয়ের সেই….....
---
✦ ২য় অন্তরা:

মিথ্যা কথা, দমননীতি
ছিল যে তখন চূড়ায়,
তবুও তরুণ মেরুদণ্ডে
দাঁড়িয়েছিল সজায়।
আজো সেই চেতনার টানে —
প্রাণটা কেঁপে যায়।
ফ্যাসিবাদের এই বাংলায়
নাই কোনো ঠাঁই নাই। 
জুলাইয়ের সেই….....
---
✦ ৩য় অন্তরা: 

বাঁধা আসে, ধমক আসে,
তবু থামে না পথ,
এই বাংলার বাতাস জানে —
ছাত্র একতার হিম্মত।
সেই প্রতিধ্বনি বুকের ভেতর —
রক্তে গর্জন গায়। 
ফ্যাসিবাদের এই বাংলায়
নাই কোনো ঠাঁই নাই। 
জুলাইয়ের সেই….....।। 

#ইসলামিক_কবিতা #বিশ্বাস #নৈতিকতা #তরিকুল_ইসলাম_খালাসী #ইসলামিক_বার্তা #বাংলা_কবিতা

তোমাদের ভুলিনি আমরা

তোমাদের ভুলিনি আমরা 
 তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (কোলকাতা) 

(শহীদ আবু সাঈদ মুগ্ধ ও শহীদদের স্মরণে)

আবু সাঈদ মুগ্ধ —
তোমাদের ভুলিনি আমরা,
মরণি মরণি জানি —
শহীদ হয়েছ তোমরা।
---
বুকে পাথর বেঁধে
এসেছিলে রাজপথে,
গড়তে সোনার বাংলা —
মানুষ থাকবে সুখে।
ফ্যাসিবাদ যাবে রুখে,
সাফাই হবে এই জংলা।
তোমাদের রেখেছি
স্মৃতির পাতায় তাই আমরা।
মরণি মরণি জানি —
শহীদ হয়েছ তোমরা।
আবু সাঈদ মুগ্ধ…
---
বৃথা যায়নি রক্ত তোমাদের,
বিজয় পেয়েছি আমরা।
ভুলিনি ভুলিনি আঠারো কোটির —
হৃদয়ে শুধুই তোমরা।
তোমাদের আজ তাই —
রেখেছি স্মরণে আমরা।
মরণি মরণি জানি —
শহীদ হয়েছ তোমরা।
আবু সাঈদ মুগ্ধ…।। 

#ইসলামিক_কবিতা #বিশ্বাস #নৈতিকতা #তরিকুল_ইসলাম_খালাসী #ইসলামিক_বার্তা #বাংলা_কবিতা

ইসলাম শেখায় ভালো কথা

ইসলাম শেখায় ভালো কথা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (কোলকাতা) 

ইসলাম শেখায় ভালো কথা,
মানুষ গড়ে নৈতিকতা,
সত্য বলো, মিথ্যা ছাড়ো,
গড়ে তোলো একতা।

মায়া-মমতা, দয়া শেখায়,
হিংসা ছেড়ে ভালোবাসায়,
ত্যাগ বিনিময় লোভকে ছাড়ি,
সময় যে ফুরায়।

আত্মা গড়ো দ্বীন শিক্ষায়,
মানুষেরই ভেদাভেদ নাই,
কালো সাদার দিনটি শেষ,
ইসলাম বলে ভাই।

প্রেম, করুণা, ধৈর্য দিয়ে,
রবের বাণী সঙ্গে নিয়ে,
সৎকর্মে মনটা যেন,
পড়ে থাকে ভাই।

ক্ষমা-দান নিয়ে সাথে,
থেকো তুমি গরিবের পাশে,
হালাল খাদ্য দাও গো তুলে,
হৃদয় থেকে ভালোবেসে।

চলো সবাই দ্বীনকে মানি,
সত্য পথেই জীবন টানি,
খুলে দেখি জীবন বিধান,
তবেই পাবো পরিত্রাণ।।


দায়িত্ব

দায়িত্ব
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

দায়িত্ব বুঝেই করলে পালন
আসে নেমে সুখ,
রাজা প্রজার ভালোবাসায়
পালায় সকল দুঃখ।

গোড়ে ওঠে ভাতৃত্ব আর
হৃদয় ভরা শান্তি,
সম্প্রীতির এই ঝলমলেতে
রয় না কোনো ক্লান্তি।

হিংসা বিদ্বেষ রয় না তখন
রয় না অপবাদ,
সবাই মিলে ভালোবাসার
করে যায় আবাদ।

চলুক এ পথ যুগে যুগে 
আসো খুলি হৃদয়, 
দায়িত্ব বুঝেই নিজ নিজের 
হৃদয় করি জয় ।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি বলেছেন—মানুষ যদি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, তাহলে সমাজে শান্তি, ভালোবাসা ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। দায়িত্ববোধ মানুষকে সত্যিকারের মানবিক ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ করে তোলে। হিংসা, বিদ্বেষ ও অপবাদ তখন আর টিকে থাকতে পারে না। তাই কবি আহ্বান করেছেন—সবাই যেন নিজ নিজ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে সমাজে ভালোবাসা ও শান্তির বীজ বপন করে।

---
প্রথম স্তবক:
“দায়িত্ব বুঝেই করলে পালন
আসে নেমে সুখ,
রাজা প্রজার ভালোবাসায়
পালায় সকল দুঃখ।”
👉 দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে মানুষের জীবনে সুখ আসে। শাসক ও শাসিত যদি ভালোবাসায় আবদ্ধ থাকে তবে সমাজ থেকে দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে যায়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“গোড়ে ওঠে ভাতৃত্ব আর
হৃদয় ভরা শান্তি,
সম্প্রীতির এই ঝলমলেতে
রয় না কোনো ক্লান্তি।”
👉 দায়িত্ববোধের মাধ্যমে সমাজে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে ওঠে। তখন হৃদয় ভরে যায় শান্তিতে। সম্প্রীতির আলোয় জীবন আলোকিত হয়ে ওঠে, সেখানে ক্লান্তি বা অবসাদ থাকে না।
---
তৃতীয় স্তবক:
“হিংসা বিদ্বেষ রয় না তখন
রয় না অপবাদ,
সবাই মিলে ভালোবাসার
করে যায় আবাদ।”
👉 দায়িত্বশীল সমাজে হিংসা, বিদ্বেষ বা অপবাদ জায়গা পায় না। সবাই মিলে ভালোবাসা ও ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“চলুক এ পথ যুগে যুগে
আসো খুলি হৃদয়,
দায়িত্ব বুঝেই নিজ নিজের
হৃদয় করি জয় ।।”
👉 কবি আহ্বান করছেন—এই দায়িত্বশীলতার পথ যুগে যুগে চলতে থাকুক। প্রত্যেকে যদি আন্তরিকভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করে তবে হৃদয় জয় করা সম্ভব, আর তাতেই শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়।

---
সারকথা:
কবিতার মূল বার্তা হলো—নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। হিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়, আর ঐক্যের আলোয় মানুষ সত্যিকারের সুখ খুঁজে পায়।

সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫

নেশা মুক্ত সমাজ গড়ো

নেশা মুক্ত সমাজ গড়ো
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

তুমি হবে আগামীকালের
দেশ গড়ার কারিগর,
নেশা মুক্ত সমাজ গড়ো
হৃদয় করো পরিষ্কার।

মদের নেশা ধ্বংস আনে
ভেঙে ফেলে সুখ,
জীবন মানে স্বপ্নভরা
নিও না সাথে দুঃখ।

নেশার জালে জড়িয়ে গেলে
হেরে যাবে জীবন,
আলো মুছে অন্ধকার ওই
হবে তোমার আপন।

চোখে মুখে আগুন, ও ভাই,
দিও না আর ভরে,
কুসঙ্গ থেকে তাই তো বলি—
থাকো অনেক দূরে।

ভাঙে সংসার, বাড়ে হাহাকার,
দুঃখেই ভরে মন,
কুকুর, বিড়াল, শিয়ালের মতো
আসে তখন মরণ।

ফিরে এসো বন্ধু আমার,
বদলাও এই জীবন,
রবের ডাকে দাও গো সাড়া—
হবেই ফুলের মতন।

তুমি হবে আগামী দিনের
আলোকিত পথিক,
সত্য-মর্যাদা আঁকো বুকে,
হয়ো না আর দাম্ভিক।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি তরুণ সমাজকে সতর্ক করেছেন নেশার ভয়াবহতা সম্পর্কে। নেশা শুধু ব্যক্তিকে নয়, পরিবার ও সমাজকেও ধ্বংস করে। তাই কবি আহ্বান জানিয়েছেন—কুসঙ্গ ও নেশা থেকে দূরে থেকে সত্য, মর্যাদা ও আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে একটি সুন্দর নেশামুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে।

---
প্রথম স্তবক:
“তুমি হবে আগামীকালের
দেশ গড়ার কারিগর,
নেশা মুক্ত সমাজ গড়ো
হৃদয় করো পরিষ্কার।”
👉 তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাতা। তাদের দায়িত্ব নেশা থেকে দূরে থেকে পরিচ্ছন্ন হৃদয়ে সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“মদের নেশা ধ্বংস আনে
ভেঙে ফেলে সুখ,
জীবন মানে স্বপ্নভরা
নিও না সাথে দুঃখ।”
👉 মদের নেশা পরিবার ও জীবনের সুখ-শান্তি নষ্ট করে। অথচ জীবন মানেই স্বপ্ন আর আশা—তাই দুঃখ ডেকে আনে এমন নেশা থেকে দূরে থাকা জরুরি।
---
তৃতীয় স্তবক:
“নেশার জালে জড়িয়ে গেলে
হেরে যাবে জীবন,
আলো মুছে অন্ধকার ওই
হবে তোমার আপন।”
👉 একবার নেশার ফাঁদে পড়লে জীবন ব্যর্থ হয়ে যায়। জীবনের আলো নিভে গিয়ে চারিদিক অন্ধকারে ডুবে যায়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“চোখে মুখে আগুন, ও ভাই,
দিও না আর ভরে,
কুসঙ্গ থেকে তাই তো বলি—
থাকো অনেক দূরে।”
👉 নেশা মানুষের চেহারায় দুঃখ, রাগ আর যন্ত্রণার ছাপ ফেলে। তাই খারাপ বন্ধু ও কুসঙ্গ থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।
---
পঞ্চম স্তবক:
“ভাঙে সংসার, বাড়ে হাহাকার,
দুঃখেই ভরে মন,
কুকুর, বিড়াল, শিয়ালের মতো
আসে তখন মরণ।”
👉 নেশা সংসার ভেঙে দেয়, সমাজে হাহাকার ছড়িয়ে দেয়। এমনকি মৃত্যুও আসে ভয়াবহ ও অপমানজনকভাবে, যেন মানুষ পশুর মতো হয়ে যায়।
---
ষষ্ঠ স্তবক:
“ফিরে এসো বন্ধু আমার,
বদলাও এই জীবন,
রবের ডাকে দাও গো সাড়া—
হবেই ফুলের মতন।”
👉 কবি স্নেহভরে আহ্বান করছেন—বন্ধু, নেশা থেকে ফিরে এসো। আল্লাহর ডাকে সাড়া দিলে জীবন হবে ফুলের মতো সুন্দর ও সুশোভিত।
---
সপ্তম স্তবক:
“তুমি হবে আগামী দিনের
আলোকিত পথিক,
সত্য-মর্যাদা আঁকো বুকে,
হয়ো না আর দাম্ভিক।। ”
👉 কবি মনে করিয়ে দিচ্ছেন—তরুণরাই আগামীর আলোকিত পথপ্রদর্শক। তাই তাদের সত্য, মর্যাদা ও বিনয়ের গুণে আলোকিত হতে হবে এবং দাম্ভিকতা ও নেশা থেকে দূরে থাকতে হবে।

---
সারকথা:
কবিতার মূল বার্তা হলো—নেশা ধ্বংসের কারণ, তাই তা থেকে দূরে থাকতে হবে। তরুণরাই ভবিষ্যৎ সমাজ গড়বে, তাদের উচিত আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে সত্য, মর্যাদা ও মানবতার আলোয় নেশামুক্ত সমাজ গড়ে তোলা।

এই যুদ্ধ

এই যুদ্ধ
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

মাথা উঁচু করে,
দাঁড়িয়েছে ইরান,
দেখো বিশ্বের মুসলমান —
কারে কয় ঈমান।

এই ঈমান প্রস্তুত সাদা
জীবন দিতে,
মুমিন যারা, তাদের আজ
পথ চেনাতে।

এই যুদ্ধ! ভয় নয়,
ঐক্য শেখায়,
বাতিলকে রুখতে
সঠিক পথ দেখায়।

আল্লাহকেই ধরেছে যারা,
তারাই পেয়েছে বিজয়,
শহীদ-গাজীর নামেই দেখো
ইতিহাসের পাতায় রয়।

হোক! এক দেহেই একটি প্রাণ —
আমরাই মুসলমান,
আমাদের বীরত্ব দেখুক
বিশ্ব জাহান।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি মুসলিম সমাজকে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তিনি ইরানের উদাহরণ টেনে বলেছেন—সত্যিকারের ঈমানদাররা আল্লাহর পথে জীবন দিতেও প্রস্তুত। যুদ্ধ মানে শুধু ভয় নয়, বরং ঐক্য, সাহস ও সত্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষা। ইতিহাসে দেখা গেছে, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা মুমিনরাই বিজয় অর্জন করেছেন, তাদের নাম শহীদ ও গাজী হয়ে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে আছে। তাই কবি আহ্বান করছেন—মুসলমানরা যেন এক প্রাণ হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং বীরত্ব দিয়ে বিশ্বকে নিজেদের শক্তি দেখিয়ে দেয়।

---
প্রথম স্তবক:
“মাথা উঁচু করে,
দাঁড়িয়েছে ইরান,
দেখো বিশ্বের মুসলমান —
কারে কয় ঈমান।”
👉 ইরান সাহসের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। কবি প্রশ্ন তুলছেন—বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে আসল ঈমানদার কারা?
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“এই ঈমান প্রস্তুত সাদা
জীবন দিতে,
মুমিন যারা, তাদের আজ
পথ চেনাতে।”
👉 সত্যিকারের ঈমান মানে আল্লাহর পথে জীবন উৎসর্গে প্রস্তুত থাকা। আর মুমিনরাই অন্যদের সঠিক পথ চিনিয়ে দিতে পারে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“এই যুদ্ধ! ভয় নয়,
ঐক্য শেখায়,
বাতিলকে রুখতে
সঠিক পথ দেখায়।”
👉 যুদ্ধ মানেই ভয়ের কিছু নয়, বরং এটি ঐক্য ও সাহসের শিক্ষা দেয়। মিথ্যা ও বাতিল শক্তিকে রুখতে যুদ্ধ মুসলমানদের সঠিক দিশা দেখায়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“আল্লাহকেই ধরেছে যারা,
তারাই পেয়েছে বিজয়,
শহীদ-গাজীর নামেই দেখো
ইতিহাসের পাতায় রয়।”
👉 যারা আল্লাহর ওপর ভরসা করেছে তারাই বিজয় অর্জন করেছে। শহীদ ও গাজীদের নাম ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“হোক! এক দেহেই একটি প্রাণ —
আমরাই মুসলমান,
আমাদের বীরত্ব দেখুক
বিশ্ব জাহান।। ”
👉 মুসলমানদের এক দেহের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবাইকে মিলিত হয়ে বিশ্বকে মুসলিম বীরত্ব দেখাতে হবে।

---
সারকথা:
কবিতার মূল শিক্ষা হলো—ঐক্য, ঈমান ও আল্লাহর ওপর ভরসাই মুসলমানদের শক্তি। সত্যিকারের মুমিনরা জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকে, আর তারাই ইতিহাসে শহীদ ও গাজী হয়ে অমর হয়ে থাকেন। মুসলমানদের উচিত এক দেহের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্বকে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করা।

রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

স্বরণ করো

স্বরণ করো 
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

দুনিয়া শুধু পথের ধাঁধা,
চলতে হবে সরল,
রবের পথে পা বাড়িয়ে
চলন করো বদল।

ভোগে মগ্ন যদি থাকে মন
পাবেই রবের শাসন,
এটা নয় গাল গপ্পো আর
মুখের শুধু ভাষণ।

চোখে লাগে দুনিয়া মিঠে,
দেখো সবই ধোঁকা,
সত্য পথে ফিরলে তবেই
রবের পাবে দেখা।

নফসের দাস হয়োনা আর,
ভেঙে ফেলো মোহ,
রবের ওয়াদা হবেই পূরণ,
নেই তাতে সন্দেহ। 

স্মরণ করো মৃত্যুর কথা,
ভুলো না পরকাল,
তুমি দুনিয়াতে যা করেছো
পাবেই তার প্রতিফল ।।


অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি মানুষকে দুনিয়ার মোহ ও ভোগ-বিলাস থেকে দূরে থাকার উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন—দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী ও প্রতারণাময়। মানুষ যদি আল্লাহর পথে চলে তবে সত্যিকারের মুক্তি ও শান্তি পাবে। নফস ও শয়তানের দাস না হয়ে আল্লাহর ওয়াদার ওপর ভরসা রাখতে হবে। মৃত্যুর কথা স্মরণ করে পরকালের জন্য প্রস্তুত হওয়াই জীবনের প্রকৃত শিক্ষা।

---
প্রথম স্তবক:
“দুনিয়া শুধু পথের ধাঁধা,
চলতে হবে সরল,
রবের পথে পা বাড়িয়ে
চলন করো বদল।”
👉 দুনিয়া এক অস্থায়ী ও বিভ্রান্তিকর ধাঁধার মতো। মানুষকে সরল পথে চলতে হবে। আল্লাহর পথে পা বাড়িয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“ভোগে মগ্ন যদি থাকে মন
পাবেই রবের শাসন,
এটা নয় গাল গপ্পো আর
মুখের শুধু ভাষণ।”
👉 যদি মানুষের মন কেবল ভোগ-বিলাসে ডুবে থাকে তবে সে আল্লাহর শাস্তির মুখোমুখি হবে। এটা কোনো কল্পকাহিনি নয়, বরং বাস্তব সত্য।
---
তৃতীয় স্তবক:
“চোখে লাগে দুনিয়া মিঠে,
দেখো সবই ধোঁকা,
সত্য পথে ফিরলে তবেই
রবের পাবে দেখা।”
👉 দুনিয়ার মোহ প্রথমে খুব মধুর মনে হয়, কিন্তু আসলে তা প্রতারণা। শুধু সত্য পথে ফিরে এলেই মানুষ আল্লাহর সাক্ষাৎ ও সন্তুষ্টি লাভ করতে পারে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“নফসের দাস হয়োনা আর,
ভেঙে ফেলো মোহ,
রবের ওয়াদা হবেই পূরণ,
নেই তাতে সন্দেহ।”
👉 মানুষ যেন নিজের নফস ও শয়তানের দাস না হয়। দুনিয়ার মোহ ভেঙে ফেলতে হবে। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূর্ণ হবে—এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
---
পঞ্চম স্তবক:
“স্মরণ করো মৃত্যুর কথা,
ভুলো না পরকাল,
তুমি দুনিয়াতে যা করেছো
পাবেই তার প্রতিফল।। ”
👉 মৃত্যুর কথা সর্বদা মনে রাখতে হবে এবং পরকালের হিসাব ভুলে যাওয়া যাবে না। দুনিয়ায় মানুষ যা করবে, তার প্রতিফলই সে পরকালে পাবে।

---
সারকথা:
কবিতার মূল শিক্ষা হলো—দুনিয়ার মোহ প্রতারণাময়, তাই আল্লাহর পথে চলতে হবে। মৃত্যুর কথা স্মরণ রেখে পরকালের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, কারণ মানুষের কর্মফলই পরকালে ফিরে আসবে।



মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

তরিকুল ইসলাম খালাসী এর জীবনী

তরিকুল ইসলাম খালাসী
জন্ম: ১৯ মে ১৯৯৬
গ্রাম: মধ্যবেনা, পোস্ট: বেনা
অঞ্চল: চন্ডিপুর, থানা: বাদুড়িয়া
মহাকুমা: বসিরহাট, জেলা: উত্তর ২৪ পরগনা
রাজ্য: পশ্চিমবঙ্গ, দেশ: ভারত

তরিকুল ইসলাম খালাসী একজন ভারতীয় কবি যিনি মূলত ইসলামিক ও সামাজিক বিষয়ভিত্তিক ছন্দময় কবিতা ও ইসলামিক গানের জন্য পরিচিত। ২০০৭ সাল থেকে তিনি নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন এবং এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০টি কবিতা ও ইসলামিক গান রচনা করেছেন, যার মধ্যে প্রায় ১০০টি মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে হারিয়ে গেছে।
সাহিত্যকর্ম
তরিকুল ইসলামের লেখা ধর্মীয় ভাবনা, আত্মশুদ্ধি, সামাজিক মূল্যবোধ এবং কুরআনের ছন্দে ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে। তাঁর কবিতাগুলো মূলত অন্ত্যমিলপূর্ণ এবং ৪+৩ মাত্রার ছন্দে রচিত।
প্রকাশনা
তাঁর লেখা কবিতা ও ইসলামিক গানগুলি প্রধানত বাংলাদেশে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পত্রিকা ও অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশিত লেখাগুলি হল: সুন্নাত আল জামাত, মীযান, মাসিক যুব প্রত্যাশা, ত্রৈমাসিক প্রত্যয়, তারণ্য, প্রত্যয়, টিডিএন বাংলা, তরিকুলের কবিতা ওয়েবসাইট এবং তাঁর ফেসবুক পেজ। গানগুলো ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে হেভেন টিউন, উইমেনস হেভেন, হেভেন টিউন খুলনা, হেভেন টিউন সাতক্ষীরা, স্টুডিও ওয়ান, ফেমাস টিউন, হাসান নাকিব, স্টুডিও তালহা, কন্ঠের সুর, তামাদ্দুন, আলাপন টিভি, রংধনুর দল, মধ্যপ্রাণ, আলোরবার্তা সহ আরও অনেক চ্যানেলে।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন নিচের সাহিত্য গ্রুপগুলো থেকে:
- স্বপ্নপূরণ সাহিত্য গ্রুপ (বাংলাদেশ)
- শখের কবিতা ও সাহিত্য আড্ডা (বাংলাদেশ)
- সাপ্তাহিক কবিতা গ্রুপ (ভারত)

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

পিছনে ফেরার নেইগো সময়

পিছনে ফেরার নেইগো সময়  
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (কোলকাতা) 

পিছনে ফেরার নেইগো সময়  
এগিয়ে চলো ভাই, 
সামনে তোমার বিজয় দেখো 
পেয়েও নাকো ভয় । 

রবের উপর ভরসা রাখো, 
বিজয় তোমার সাথে, 
ধৈর্য তুমি সঙ্গী করো  
চলো শান্তির পথে । 
তুমি হার মানিলে যাবে হেরে.. 
মনে রাখো ভাই । 
সামনে তোমার বিজয় দেখো 
পেয়েও নাকো ভয় । 
পিছনে ফেরার……….... 

আল্লাহ যারে সহায় হয় 
সেই তো পাই জয়, 
তুমি মুমিন দাও গো তোমার 
শুধুই পরিচয় । 
সত্য পথে থাকলে টিকে..
নেই তো কোন ক্ষয় । 
সামনে তোমার বিজয় দেখো 
পেয়েও নাকো ভয় । 
পিছনে ফেরার……….... ।।



যুবক তুমি নবীর সেনা

যুবক তুমি নবীর সেনা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (কোলকাতা) 

আলো-আঁধার পথের মাঝে  
জ্বলুক ঈমান দীপ,  
যুবক তুমি নবীর সেনা,  
হয়ো না দাম্ভিক। 

বিপদ এলে ভয় পেও না,
রবকে করো স্মরণ,
তোমার শক্তি তাকওয়াতে,
এই তো চিরধরণ। 
যদি তুমি সত্যে থাকো.. 
হবে যে নির্ভীক ।
যুবক তুমি নবীর সেনা,  
হয়ো না দাম্ভিক। 
আলো-আঁধার....…..... 

তাকওয়া দিয়ে গড়ো সমাজ 
জাগাও তোমার জাতি, 
ভালো পথেই অর্জন করো 
তুমি তোমার খ্যাতি । 
মিথ্যা পথে হেঁটো না ভাই..
হাঁটে মুনাফিক ।
যুবক তুমি নবীর সেনা,  
হয়ো না দাম্ভিক। 
আলো-আঁধার....…..... ।।


শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫

আমপারা কবিতা সংকলন

আমপারা কবিতা সংকলন 
📘 উৎসর্গ

এই ক্ষুদ্র কাব্য সংকলন উৎসর্গ করা হলো সেই সব হৃদয়বান পাঠকের প্রতি— যারা কুরআনের বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করে, ছন্দে ছন্দে পথ খোঁজে আলোর।

✍️ লেখকের কথা

আলহামদুলিল্লাহ। এই সংকলনের প্রতিটি কবিতা সূরা "আমপারা"র বাণী অবলম্বনে লেখা। সহজ ভাষা, মাধুর্যপূর্ণ ছন্দ, এবং অন্ত্যমিলের মাধ্যমে কুরআনের শিক্ষা পাঠকের অন্তরে পৌঁছে দেওয়াই ছিল আমার উদ্দেশ্য। ২০০৭ সাল থেকে লেখালেখির এই যাত্রায় আমি চেষ্টা করেছি সত্যের কথা তুলে ধরতে — কখনো ইসলামের প্রতি ভালোবাসা, কখনো সমাজের প্রতিবাদে কলম ধরেছি। এই সংকলনে তা আরও সুসংবদ্ধভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

এই কাব্যগ্রন্থ সকল পাঠকের জন্য হোক হেদায়াতের সোপান।

আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমীন।

— তরিকুল ইসলাম খালাসী

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫

উৎসর্গ

🌹 উৎসর্গ

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নামে,
যিনি কলম ধরিয়ে দেন, বাণী দেন, ইলহাম দেন।

উৎসর্গ করছি—
👉 সেই সকল ইমানদার হৃদয়কে,
যারা কুরআনের আলোয় জীবন গড়তে চায়,
👉 সেই সকল শিক্ষক ও অভিভাবককে,
যারা তরুণ প্রজন্মকে দীনী জ্ঞান দিতে চেষ্টারত,
👉 এবং সেই সকল ভাই-বোনকে,
যারা ছন্দে খুঁজে পান ঈমানের স্পর্শ।

আরও উৎসর্গ করছি—
আমার প্রিয় পিতা-মাতা ও পূর্বপুরুষদের প্রতি,
যাদের দোয়া, ত্যাগ ও ভালোবাসা আমার পথচলার পাথেয়।

আল্লাহ তাআলা তাঁদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন,
এবং আমাদের সবাইকে কুরআনের আলোয় জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন।

আমীন।

লেখকের কথা

✍️ লেখকের কথা

(“ছন্দে ছন্দে কুরআনের বাণী” সংকলনের প্রারম্ভিক বক্তব্য)

আলহামদুলিল্লাহ।

পবিত্র কুরআন—মানবতার পথপ্রদর্শক, শান্তির দিশারী। সেই মহান বাণীর সৌন্দর্য ও শিক্ষা যেন আরও হৃদয়গ্রাহী হয় – এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস, “ছন্দে ছন্দে কুরআনের বাণী”।

আমি তরিকুল ইসলাম খালাসী, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যবেনা গ্রামের একজন খারেজি ও সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্র। ২০০৭ সাল থেকে লেখালিখির জগতে আছি। ইসলামিক ও সামাজিক ছন্দমিলপূর্ণ কবিতা রচনায় আমার বিশেষ আগ্রহ।

আলহামদুলিল্লাহ, আজ পর্যন্ত আমার লেখা প্রায় ১০০টির কাছাকাছি ইসলামিক গান ও কবিতা এপার বাংলা ও ওপার বাংলার বিভিন্ন পত্রিকায়, এবং জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে। এই কাজগুলো অনেক ভাই-বোনের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে—এটাই আমার বড় প্রাপ্তি ও তৃপ্তি।

এই সংকলনে আমি চেষ্টা করেছি আমপারা অংশের সূরাগুলোর মূল শিক্ষা ও বার্তাকে ছন্দের মাধ্যমে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে। প্রতিটি কবিতা যেন শুধু ছন্দের খেলা না হয়ে বরং চিন্তা, ঈমান, ও আমলের দিশা দেয়—এটাই আমার কামনা।

এই কাজ কোনোভাবেই নিছক কবিতা লেখা নয়—বরং এটি কুরআনের আলোয় জীবন গড়ার দিকে এক ছোট্ট পদক্ষেপ। ভুলত্রুটি থেকে থাকলে ভাইয়ের চোখে দেখবেন, সংশোধনের সুযোগ দেবেন।

আমি কৃতজ্ঞ—আমার রবের প্রতি, যিনি কলম চালিয়েছেন। কৃতজ্ঞ আমার পাঠকের প্রতি, যিনি এই কবিতাগুলো হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করবেন। কৃতজ্ঞতা জানাই আমার শিক্ষক, সহপাঠী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের—যারা সবসময় প্রেরণা জুগিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা কবুল করুন এবং সকল পাঠককে কুরআনের আলোয় আলোকিত জীবন যাপনের তাওফিক দান করুন।
আমীন।


---

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া, উত্তর ২৪ পরগণা (পশ্চিমবঙ্গ)
📅 লেখালিখির সূচনা: ২০০৭ সাল
🎵 প্রকাশিত ইসলামিক গান: প্রায় ১০০
📰 প্রকাশনা: বিভিন্ন পত্রিকা ও ইউটিউব চ্যানেল
📖 ইসলামিক ও সামাজিক কবি


ভেদ করো না✍️

🕊️ ভেদ করো না

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী
📖 সূরা আলে ইমরান: আয়াত ১০৫ অবলম্বনে
---
📜
ভেদ করো না, ভাইরে মোরা |
একই দীনের লোক,
তওহিদেরই রশি ধরি |
ভাঙবো না সেই শোক।
---
হকের পথে যারা ছিল |
তারা ভুলে যায়,
জানার পরও ভাগ হইলে |
রহমত ফিরায় পায়।
---
নামাজ পড়ো, রোজা রাখো |
তবু যদি ভাঙো,
ঈমান কাঁদে, সেই সমাজ |
জাহান্নামে ঝাঙো।
---
রাসূল বলেন, “ঐক্য রাখো” |
আছে বাণী সুনী,
যারা করে দল উপদল |
তাদের মোহর রাণী!
---
পার্থিব মোহ, দুনিয়ার রং |
করো সেসব ত্যাগ,
এক উম্মতের ছায়াতলে |
আসুক রহম ভাগ।।


তোমার পথে

তোমার পথে 
✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (কোলকাতা) 

তোমারই নামে করি যে শুরু,
তুমি দয়া-ভরা,
তুমি যে প্রভু, জগতের রব,
রহমতে পথ ধরা।

তোমারি দয়া ঢেকে রাখে
পাপ-পঙ্কিল মনে,
তুমি বিচার দিবসের মালিক,
থামাও অন্যায় ক্ষণে।

তোমারি কাছে ইবাদতের
নয়ন তুলে চায়,
তোমারি দ্বারে সাহায্যের মিনতি—
মন কাঁদে শুধুই তাই।

সোজা সে পথ দেখাও আমায়
যে পথে তব দান,
সত্য, ন্যায়ের, নেক বান্দার
আছে যেখানে স্থান।

ভ্রান্ত যে পথে গজব নামে,
দেখিও না সে দিক,
তোমার পথে রাখো হে প্রভু,
জীবন হোক সৌভিক।। 

নাসের রব

নাসের রব

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী

চাই আশ্রয় হে নাসের রব,
শয়তানের খারাপ,
তুমি ইলাহ, তুমি যে মালিক,
তোমাতেই শান্তি চাপ।

চুপটি করে ফিসফিস করে,
মনটা করে কালো,
দেয় কুমন্ত্রণা, সন্দেহ-বিষ,
হৃদয় করে ভালো।

সে যে লুকায় মানুষের মাঝে,
অদৃশ্য তার খেলা,
জিন আর মানুষ – সবাই ভেতরে,
জড়ায় শয়তান বেলা।। 


ভোরের প্রভু

ভোরের প্রভু

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী

ভোরের প্রভু, তোমারই কাছে
চাই যে আশ্রয় পাকা,
সব অশুভ আর ক্ষতি থেকে
রাখো আমায় ঢাকা।

রাতের আঁধার ঢেকে যখন
মনটা নামে ঘরে,
তোমারি নিকট বলি মিনতি —
ভয় যেন না ধরে।

যে যাদুতে বাঁধে বন্ধন,
হিংসা ছড়ায় প্রাণে,
তার ছায়া থেকে তুমি রক্ষা
করো আমার জানে।। 

এক আল্লাহ

এক আল্লাহ 

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী

বলো হে প্রিয়! আল্লাহ একজন,
নাই তাঁর কোনো জোড়া,
তিনি অমুখাপেক্ষী রব,
আছেন আপন অহরা।

জন্ম নেন না, কাউকে দেন না,
তিনি অনাদি চির,
তাঁরই আদেশে চলে বিশ্ব,
তাঁরই কৃপায় নীর।

নেই তাঁর মতো কোনো সত্তা,
নেই সমান দুনিয়া,
তিনি ছাড়া উপাস্য নন —
এই তো ঈমান জিয়া।

সৃষ্টি, পালন, ধ্বংসে তিনিই
করেন একক কাজ,
তাঁরিই নামে জপে জগত,
চলে শান্তির রাজ।।