সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭

প্রবন্ধ:- অবশ্যই রাষ্ট্রপ্রধানের সমালোচনা করার অধিকার রাখি

অবশ্যই রাষ্ট্রপ্রধানের সমালোচনা করার
                      অধিকার রাখি
          @মোঃ তরিকুল ইসলাম মন্ডল@
                    15/06/2016
আমরা রাষ্ট্রপ্রধানের কাজ কর্মের প্রতি তীব্র তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখার অধিকার রাখি।এবং সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের বড় বড় দায়িত্বপূর্ণ পদাধিকারী ব্যক্তিদের কার্যকলাপের প্রতি লক্ষ্য রাখা সামগ্রিক ভাবে গোটা জাতির এবং ব্যক্তিগত ভাবে প্রত্যেকটি নাগরিকের একান্ত কর্তব্য।কিন্তু আমার দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি রাজ্যপাল ও গ্রাম অঞ্চল ব্লকের নেতারা যে অপরাধ করে যাচ্ছে তা আজকের মুসলমান আলেমরা মাথা পেতে নিচ্ছে সার্থ-সিদ্ধির জন্য ।কিন্তু এই আলেমদের কাজ ছিল তাদের ভুল-ভ্রান্তি গুলি স্পষ্ট ভাবে তাদেরকে বলে দেওয়া ।আজ না বলার কারণেই তারা মারাত্মক ভুল করে যাচ্ছে ।এবং তারা শেষপর্যন্ত গোটা জাতি ও রাষ্ট্রকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে ।
এর একটাই কারণ, দেশের মুসলমানরা নিরব বলেই ।যতদিন মুসলমানদের আলেমরা নিরব থাকবে ততদিন পর্যন্ত মুসলমানরা লাঞ্ছিত নিপীড়িত হতেই থাকবে ।এ জন্যে হাদিসে উদ্ধৃত হয়েছে, নবী করীম(সঃ)বলেছেন :
"দ্বীন হলো নছীহত ।আমরা বললাম:কারজন্যে?তিনি বললেন:(রাষ্ট্রীয়)নেতাদের জন্যে এবং মুসলিম জনগণের জন্যে ।"(মুসলিম শরীফ)
এভাবে নছীহতের পরও যদি কোন শুভ ফলোদয় না হয়, তা হলে রাষ্ট্রপ্রধানদের ঠিক ভাবে পরিচালিত করার জন্যে শক্তি প্রয়োগ করতে হবে ।রসূল্লাহ(সঃ)বলছেন: প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করতে হবে ।আর এরা বলছে এটা হিন্দুত্ববাদের দেশ এখানে চলবে না ।এতুই দুর্বল ঈমান এদের,আবার বলে আমরা মুসলমান।মুসলমান হতে হলে কি কি করোওনিও এরা কী জানে না!এরা কি এটাও জানে না নবী করীম (সঃ)-এর কি নির্দেশ ছিল! নবী করীম(সঃ)আমাদের আদেশ করেছেন :
"আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি,তোমরা অবশ্যই ন্যায়ের আদেশ করবে ।অন্যায়ের প্রতিরোধ করবে ।যালেমের হাত শক্ত করে রাখবে,সত্য নীতির ওপর স্থির করে রাখবে এবং তাকে সত্য কাজ করতেই বাধ্য করবে ।অন্যথায় মনে রাখবে, আল্লাহ্ তোমাদের মনকে পরস্পরের প্রতি খারাপ করে দেবেন ।আর শেষ পর্যন্ত তোমাদের কে পূর্ববর্তীদের মতো অভিশপ্ত করবেন ।"(আবু দাউদ)
রসূল্লাহ(সঃ)আরও বলেছেন :যে "লোকেরা যখন যালেমকে জুলুম করতে দেখবে, তখন যদি তারা দু'হাত শক্ত করে না ধরে রাখে তাহলে আল্লাহর আযাব সাধারণ ভাবে সবাইকে গ্রাস করতে পারে ।"(রিয়াদ্বুচ্ছালেহীন)
রাষ্ট্রপ্রধান ও রাষ্ট্রের অপরাপর দায়িত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের প্রতি এরূপ তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখার অধিকার একটা জাতীয় অধিকার ।সেই অধিকার আমরা কী রাখতে পেরেছি?আবার বলছি আমরা মুসলমান ।সর্বপ্রথম পুরুষ যিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন হজরত আবুবকর সিদ্দিক(রাঃ)খলিফা নির্বাচিত হয়ে সর্বপ্রথম যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন :"আমি ভালো করলে তোমরা সবাই আমার সহযোগিতা করবে ।আর আমি যদি বাঁকা পথে চলতে শুরু করি,তোমরা আমাকে সঠিক পথে চলতে বাধ্য করবে।"(তাবকাতে  কুবরা ইবনে সায়াদ,3য়খণ্ড,183পৃষ্ঠা)"
দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ফারুক(রাঃ)তার এক ভাষণে একথা বলেননি? যে "তোমাদের মধ্য   থেকে কেউ আমার মধ্যে কোনওরূপ বক্রতা লক্ষ্য করলে তা দূর করে দেয়া তার কর্তব্য ।তখন উপস্থিত লোকদের একজন বলে উঠলো: "আল্লাহর কসম,আপনার মধ্যে কোনওরূপ বক্রতা দেখতে পেলে আমরা আপনাকে আমাদের তরবারির সাহায্যেই ঠিক করে রাখবো ।"এ কথা শুনে দ্বিতীয় খলিফা উচ্চস্বরে বলে উঠলেন : আল্-হামদুল্লাহ,"আল্লাহ্ হজরত মুহাম্মদ(সঃ)-এর উম্মাতের মধ্যে এমন লোক সৃষ্টি করেছেন, যারা তাদের তরবারির দ্বারা ওমর  কে ঠিক পথে চালাতে পারে ।"তাই বলবো আমি আমার মুসলিম ভাইদের কে, আমরা এখনো আমাদের অধিকার কে যদি বুঝে না নিতে পারি ।তাহলে আগামীতে এমন এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আসছে যে কথা মুখে বোঝানো যায় না ।যেমন যেখানে যে ঔষধের প্রয়োজন সেখানে সেই ঔষধ ব্যবহার না করলে ইনফেকশন হয়ে যায় ।তদ্রূপ সত্য মিথ্যার পার্থক্য না করলে'শুধু বিপর্যয় নয়'বরং মহা-বিপর্যয় সৃষ্টি হয় ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন