বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

মেজাজ

মেজাজ 
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

তুমি যদি মেজাজ হারাও
ভাঙবে বোনা স্বপ্ন,
শান্তির বুকে উঠবে আগুন,
হারাবে সকল যত্ন।

জানো! সম্পর্ক হারানো মানে
জমে ভুলের পাহাড়,
জীবন যুদ্ধে যাবে হেরে
হারিয়ে যাবে অধিকার।

তাই রাগের বশে বারেবারে
কথায় করোনা আঘাত,
ভেঙে যাবে বিশ্বাসগুলো,
বেড়েই যাবে সংঘাত।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি মানুষকে বিশেষভাবে রাগ ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দিয়েছেন। হঠাৎ মেজাজ হারানো শুধু নিজের ক্ষতিই নয়, বরং সম্পর্ক, ভালোবাসা ও শান্তির পরিবেশকে ধ্বংস করে দেয়।

প্রথম স্তবক:
“তুমি যদি মেজাজ হারাও ভাঙবে বোনা স্বপ্ন, শান্তির বুকে উঠবে আগুন, হারাবে সকল যত্ন।”
👉 মেজাজ হারালে মানুষের শান্তি নষ্ট হয়। যেসব স্বপ্ন যত্নে গড়া হয়েছিল, তা ভেঙে যায়। শান্তির পরিবেশে অশান্তি ও আগুন জ্বলে ওঠে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“জানো! সম্পর্ক হারানো মানে জমে ভুলের পাহাড়, জীবন যুদ্ধে যাবে হেরে হারিয়ে যাবে অধিকার।”
👉 রাগের কারণে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে জীবনে ভুল জমতে থাকে। তখন মানুষ জীবনের লড়াইয়ে হেরে যায়, নিজের অধিকারও হারাতে থাকে।

তৃতীয় স্তবক:
“তাই রাগের বশে বারেবারে কথায় করোনা আঘাত, ভেঙে যাবে বিশ্বাসগুলো, বেড়েই যাবে সংঘাত।।
👉 রাগের বশে কাউকে কটু কথা বলা বা আঘাত করলে বিশ্বাস ভেঙে যায়। বিশ্বাস ভাঙলে সম্পর্কেও সংঘাত বাড়ে । 
---

👉 সারকথা: কবিতাটি আমাদের সতর্ক করছে—রাগ নিয়ন্ত্রণ না করলে শান্তি নষ্ট হয়, সম্পর্ক ভাঙে, জীবনে হারাতে হয় অনেক কিছু। তাই রাগ নয়, ধৈর্য ও বোঝাপড়াই জীবনের সঠিক পথ।




বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

আমার ভাষা বাংলা

আমার ভাষা বাংলা 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

আমার ভাষা বাংলা রে ভাই 
চির সত্যের গান, 
এই ভাষাতেই ফোটে যে ফুল 
ছড়ায় সুপ্ত ঘ্রাণ । 

আমার ভাষায় নেই ভেদাভেদ 
কোনো জাত-পাত, 
তোমার ভাষায় কেন করো ভাই 
মানুষের আঘাত । 
বাংলা ভাষা মায়ের ভাষা..  
বাংলা আমার প্রাণ । 
এই ভাষাতেই ফোটে যে ফুল 
ছড়ায় সুপ্ত ঘ্রাণ । 
আমার ভাষা........ 

দেশ স্বাধীনে বাংলা ভাষী 
দিয়েছে শত প্রাণ, 
সেই বাঙালি আজকে কেন 
হয় গো অপমান । 
হাজারো ভাষার এদেশ আমার.. 
অধিকার সমান । 
এই ভাষাতেই ফোটে যে ফুল 
ছড়ায় সুপ্ত ঘ্রাণ । 
আমার ভাষা........ ।। 






সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

বিশ্বস্ত সঙ্গী

বিশ্বস্ত সঙ্গী 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

বিশ্বস্ত সঙ্গী যদি পাও,
তাকে সঙ্গী করো,
তোমার হৃদয়ের ভালোবাসা
নির্বিচারে উজাড় করো।

থেকো পাশে সদা তার
হোক না যতই ঝড়,
তোমার বিশ্বাসে রাখো তাকে
ভালোবাসার পাহাড়।

মনের কথা খুলে বলো,
লুকিও না ক্ষোভ,
সঙ্গী হবে আয়না তোমার —
দুঃখ বুঝবে সব।

সময় যদি আনে দুর্দিন,
তবু রবেনা সংশয়,
ভালোবাসার বন্ধন হোক
আমাদের পরিচয়।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি একজন সত্যিকারের বিশ্বস্ত সঙ্গীর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। জীবনে এমন সঙ্গী পাওয়া মানে হলো ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সহমর্মিতার একটি আশ্রয় পাওয়া।

প্রথম স্তবক:
“বিশ্বস্ত সঙ্গী যদি পাও, তাকে সঙ্গী করো,
তোমার হৃদয়ের ভালোবাসা নির্বিচারে উজাড় করো।”
👉 কবি বলছেন—যদি জীবনে সত্যিকারের একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী পাওয়া যায়, তবে তাকে গ্রহণ করো, এবং তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও।

দ্বিতীয় স্তবক:
“থেকো পাশে সদা তার হোক না যতই ঝড়,
তোমার বিশ্বাসে রাখো তাকে ভালোবাসার পাহাড়।”
👉 ভালো সঙ্গীকে কখনো ঝড়-ঝাপটা বা কষ্টের সময়ে একা ফেলে দিও না। বিশ্বাস ও ভালোবাসা দিয়ে সম্পর্ককে পাহাড়সম দৃঢ় করো।

তৃতীয় স্তবক:
“মনের কথা খুলে বলো, লুকিও না ক্ষোভ,
সঙ্গী হবে আয়না তোমার — দুঃখ বুঝবে সব।”
👉 সঙ্গীর কাছে মনের কথা প্রকাশ করতে হবে। দুঃখ-ক্ষোভ লুকিয়ে রাখা নয়। সঙ্গী যেন আয়নার মতো হয়—যে সব দুঃখ বোঝে ও উপলব্ধি করে।

চতুর্থ স্তবক:
“সময় যদি আনে দুর্দিন, তবু রবেনা সংশয়,
ভালোবাসার বন্ধন হোক আমাদের পরিচয়।”
👉 জীবনে দুর্দিন এলে, বিশ্বস্ত সঙ্গীর সাথে কোনো সংশয় থাকা উচিত নয়। কারণ প্রকৃত সম্পর্কের আসল পরিচয় হলো ভালোবাসার দৃঢ় বন্ধন।

---

👉 সারকথা:
কবিতাটি শেখাচ্ছে—জীবনের সেরা সম্পদ হলো বিশ্বস্ত সঙ্গী। তাকে বিশ্বাস, ভালোবাসা ও খোলামেলা মনোভাবের মাধ্যমে ধরে রাখতে হবে। দুর্দিন-সুদিনে পাশে থাকলেই সত্যিকারের সঙ্গীর পরিচয় মেলে।

আদর্শ নেতা

আদর্শ নেতা
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

নেতা সে — যে করে কাজ,
করে না অহংকার,
সত্য পথে চলে সদা,
ভয় পায় না ঝঞ্ঝার।

নেতা সে — যে চায় ভালো,
জনতারই মঙ্গল,
নিজের চেয়ে বেশি ভাবে,
দেশকে করতে উজ্জ্বল।

নেতা সে — যে নত নয়
কারো হুমকিতে কখনো,
ন্যায়ের উপর থাকে অবিরাম,
যে বিধান রবের দেখানো।

নেতা সে — যে শেখায় সাহসীকতা,
থাকে সামনের সারিতে,
সে নিজেই গড়ে উদাহরণ
বাতিলকে রুখে দিতে।

নেতা সে — যার চাহনিতে আছে
দীপ্ত স্বপ্নে ভরা,
আদর্শে গড়তে সদা প্রস্তুত
এই সুন্দর বসুন্ধরা।। 


অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি একজন সত্যিকারের আদর্শ নেতার গুণাবলি ফুটিয়ে তুলেছেন। নেতার প্রকৃত দায়িত্ব কী হওয়া উচিত, তা পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।

প্রথম স্তবক:
“নেতা সে — যে করে কাজ, করে না অহংকার,
সত্য পথে চলে সদা, ভয় পায় না ঝঞ্ঝার।”
👉 সত্যিকারের নেতা কাজে বিশ্বাসী, অহংকার করে না। তিনি সবসময় সত্যের পথে চলেন, এবং ঝড়-ঝাপটার ভয় করেন না।

দ্বিতীয় স্তবক:
“নেতা সে — যে চায় ভালো, জনতারই মঙ্গল,
নিজের চেয়ে বেশি ভাবে, দেশকে করতে উজ্জ্বল।”
👉 নেতা কেবল নিজের লাভের কথা ভাবেন না। তিনি জনগণের মঙ্গল চান এবং দেশকে উন্নত করতে নিজেকে উৎসর্গ করেন।

তৃতীয় স্তবক:
“নেতা সে — যে নত নয় কারো হুমকিতে কখনো,
ন্যায়ের উপর থাকে অবিরাম, যে বিধান রবের দেখানো।”
👉 নেতা কখনো অন্যায় বা হুমকির কাছে নত হয় না। তিনি আল্লাহর দেখানো ন্যায়নীতির পথেই অবিচল থাকেন।

চতুর্থ স্তবক:
“নেতা সে — যে শেখায় সাহসীকতা, থাকে সামনের সারিতে,
সে নিজেই গড়ে উদাহরণ বাতিলকে রুখে দিতে।”
👉 নেতা জনগণকে সাহস জোগান, তিনি নিজে সামনে দাঁড়ান। তিনি নিজেকে উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং মিথ্যা বা অন্যায়কে রুখে দেন।

পঞ্চম স্তবক:
“নেতা সে — যার চাহনিতে আছে দীপ্ত স্বপ্নে ভরা,
আদর্শে গড়তে সদা প্রস্তুত এই সুন্দর বসুন্ধরা।।
👉 আদর্শ নেতা দূরদর্শী। তাঁর চোখে উজ্জ্বল স্বপ্ন থাকে। তিনি সর্বদা প্রস্তুত থাকেন পৃথিবীকে আদর্শে সাজাতে।

---

👉 সারকথা:
কবিতায় বোঝানো হয়েছে—আদর্শ নেতা কেবল ক্ষমতালোভী বা অহংকারী নন। তিনি সত্য, ন্যায়, সাহস, আত্মত্যাগ ও মানবতার প্রতীক। তাঁর লক্ষ্য হলো জনগণ ও দেশের কল্যাণ, এবং পৃথিবীকে আদর্শের আলোয় আলোকিত করা।


#আদর্শনেতা #নেতৃত্ব #বাংলাকবিতা #নেতারগুণাবলী #ইসলামিককবিতা #সামাজিকচেতনা  
#TarikulKhalashi #BanglaPoem #Leadership #IdealLeader #IslamicPoetry #Inspirational  
#নেতা_সে #সচেতনতা #জনসেবক #সত্যেরপথে #ভয়হীন #বাংলাসাহিত্য  
#MuslimPoet #SocialPoetry #PoetFromBengal #VoiceOfTruth #Abritti #Kobita 
#আদর্শনেতা #নেতৃত্ব #বাংলাকবিতা #নেতারগুণাবলী #সত্যেরপথে  
#TarikulKhalasi #Leadership #BanglaPoetry #IdealLeader  
#ইসলামিককবিতা #সামাজিকচেতনা #VoiceOfTruth #Abritti



রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

এসো আবার

এসো আবার 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

এসো আবার স্বপ্নগুলো
করি বাস্তবায়ন,
নিঃস্বার্থে কাজগুলোকেই
করি মূল্যায়ন।

এসো আবার আগের মতো
হই ঐক্যবদ্ধ,
ভুলে যাই ক্ষুদ্র হিংসা,
বন্ধ হোক যুদ্ধ।

এসো আবার সাহস বুকে
দুর্নীতিকে দিই রুখে,
নব প্রভাত আসবে তবে
থাকবে সবাই সুখে।

এসো আবার ভালোবাসি
পথের ধারের মানুষগুলো,
ধূলি- ধূসর মুখগুলি চায়
একটু আশার আলো। 

এসো আবার গড়ে তুলি
আলো মাখা দিন,
মানবতার ছায়াতলে
থাকুক সত্য দ্বীন।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি সমাজকে নতুন করে জাগানোর ডাক দিয়েছেন। তিনি চান—মানুষ আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিঃস্বার্থ কাজ, ভালোবাসা, ন্যায় ও মানবতার ভিত্তিতে একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলুক।

প্রথম স্তবক:
“এসো আবার স্বপ্নগুলো করি বাস্তবায়ন, নিঃস্বার্থে কাজগুলোকেই করি মূল্যায়ন।”
👉 স্বপ্ন শুধু কল্পনায় নয়, বাস্তব জীবনে রূপ দিতে হবে। যে কাজ নিঃস্বার্থভাবে হয়, তারই মূল্য আছে। তাই নিঃস্বার্থ কাজকেই গুরুত্ব দিতে হবে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“এসো আবার আগের মতো হই ঐক্যবদ্ধ, ভুলে যাই ক্ষুদ্র হিংসা, বন্ধ হোক যুদ্ধ।”
👉 মানুষকে একত্রিত হতে হবে। ছোটখাটো হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। যুদ্ধ নয়, ঐক্যই মানবতার পথ।

তৃতীয় স্তবক:
“এসো আবার সাহস বুকে দুর্নীতিকে দিই রুখে, নব প্রভাত আসবে তবে থাকবে সবাই সুখে।”
👉 দুর্নীতি সমাজকে গ্রাস করছে। সাহস নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তবেই নতুন প্রভাত আসবে, আর সমাজ সুখী হবে।

চতুর্থ স্তবক:
“এসো আবার ভালোবাসি পথের ধারের মানুষগুলো, ধূলি-ধূসর মুখগুলি চায় একটু আশার আলো।”
👉 সমাজে যারা অবহেলিত, পথের ধারে পড়ে থাকা দুঃখী মানুষ, তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে। তারা আশার আলো চায়, সেই আলো দিতে হবে।

পঞ্চম স্তবক:
“এসো আবার গড়ে তুলি আলো মাখা দিন, মানবতার ছায়াতলে থাকুক সত্য দ্বীন।।
👉 কবির চূড়ান্ত আহ্বান—আবার সবাই মিলে সত্য ও মানবতার পথে এগিয়ে আসি। একটি আলো ভরা দিন গড়ে তুলি, যেখানে সত্য, শান্তি ও দ্বীন (ধর্ম) একসাথে প্রতিষ্ঠিত হবে।

---

👉 সারকথা: কবিতাটি একটি জাগরণী আহ্বান—ঐক্য, ভালোবাসা, নিঃস্বার্থ কাজ, দুর্নীতি প্রতিরোধ, মানবতা ও সত্যের ছায়াতলে একটি নতুন সমাজ গড়ে তোলার ডাক।

শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

বাঁধনের অভাব

 বাঁধনের অভাব
 তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

যে বাঁধন ছিঁড়ে গেলে
হারিয়ে যায় সব,
দিকে দিকে সেই বাঁধনের
আজ খুবই অভাব।

যেখানে ছিল আগে
ভালোবাসার টান,
সেখানে আজ দেখি
স্বার্থপূজার ঘ্রাণ।

ভ্রাতৃত্ব হারিয়ে আজ
হৃদয় হয়েছে শুষ্ক,
জমেছে শত ক্ষোভ —
আর বেড়েছে দুঃখ।

বেড়েছে ঝগড়া–হিংসা,
কমেছে সহানুভূতি,
মানবতার নামে আজ
বিক্রি হয় মিথ্যাবৃতি।

স্বজন চেনে টাকা,
অচেনা চায় দাম,
মমতার সে বাঁধন
ভাঙছে প্রতি কাম।

এসো আবার গড়ি
ভালোবাসার গ্রাম,
যেখানে বাঁধন হবে —
আদর্শ ইসলাম।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি তুলে ধরেছেন মানুষের মধ্যে আজ যে ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব, সহানুভূতি ও মানবিকতার অভাব, তার চিত্র। একসময় যেখানে সম্পর্কগুলো ছিল ভালোবাসা ও আন্তরিকতার বাঁধনে গাঁথা, সেখানে এখন ভেঙে যাচ্ছে সে বন্ধন।

প্রথম স্তবক:
“যে বাঁধন ছিঁড়ে গেলে হারিয়ে যায় সব,
দিকে দিকে সেই বাঁধনের আজ খুবই অভাব।”
👉 কবি বলছেন, সম্পর্কের যে বন্ধন ছিঁড়ে গেলে সবকিছু ভেঙে পড়ে—আজ সমাজে সেই বন্ধনের ভীষণ অভাব দেখা দিচ্ছে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“যেখানে ছিল আগে ভালোবাসার টান,
সেখানে আজ দেখি স্বার্থপূজার ঘ্রাণ।”
👉 আগে সম্পর্ক গড়ে উঠত ভালোবাসা ও টান দিয়ে। এখন সেই জায়গায় এসেছে স্বার্থপরতা ও ভণ্ডামির গন্ধ।

তৃতীয় স্তবক:
“ভ্রাতৃত্ব হারিয়ে আজ হৃদয় হয়েছে শুষ্ক,
জমেছে শত ক্ষোভ — আর বেড়েছে দুঃখ।”
👉 ভ্রাতৃত্বের অনুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে মানুষ একে অপরের প্রতি ক্ষোভে ভরে যাচ্ছে এবং দুঃখ বেড়ে চলেছে।

চতুর্থ স্তবক:
“বেড়েছে ঝগড়া–হিংসা, কমেছে সহানুভূতি,
মানবতার নামে আজ বিক্রি হয় মিথ্যাবৃতি।”
👉 সমাজে আজ ঝগড়া-হিংসা বেড়েছে, কিন্তু সহানুভূতি কমেছে। মানবতার নামে ভণ্ডামি ও প্রতারণাই চলছে।

পঞ্চম স্তবক:
“স্বজন চেনে টাকা, অচেনা চায় দাম,
মমতার সে বাঁধন ভাঙছে প্রতি কাম।”
👉 আজকের যুগে আত্মীয়স্বজনও টাকা ছাড়া চেনে না। অচেনা মানুষও মূল্য চায়। তাই মমতার বাঁধন ভেঙে যাচ্ছে বারবার।

ষষ্ঠ স্তবক (সমাধান):
“এসো আবার গড়ি ভালোবাসার গ্রাম,
যেখানে বাঁধন হবে — আদর্শ ইসলাম।।
👉 কবি আহ্বান জানাচ্ছেন—আসো, আমরা আবার ভালোবাসা, মমতা, ভ্রাতৃত্ব ও আদর্শ ইসলামের আলোকে একটি নতুন সমাজ গড়ে তুলি।

---

👉 সারকথা:
কবিতাটি বর্তমান সমাজের স্বার্থপরতা, ভ্রাতৃত্বহীনতা, ভণ্ডামি ও মানবিকতার অভাবের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। একইসঙ্গে এটি একটি সমাধানের ডাক—ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও ইসলামের আদর্শে সমাজকে নতুন করে গড়ে তোলার।

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

জামাতে ইসলামী হিন্দ

 জামাআতে ইসলামী হিন্দ 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

জামাআতে ইসলামী হিন্দ,
লক্ষ একামাতে দ্বীন,
আল্লাহর হুকুম করতে কায়েম —
গড়তে চাই জমিন।

চাই এ জামাআত দাওয়াত দিতে
প্রতিটি ঘরে ঘরে,
ইসলামের আলো জ্বলে উঠুক
সব মানব-অন্তরে।
সেই আশাতেই চলছে পথে...
গড়তে একামাতে দ্বীন।
জামাআতে ইসলামী......

নবীর দেখানো পথে হেঁটে
জাগাতে চাই সমাজ,
একতা, তাকওয়ার গুণাবলী
মানতে তোলে আওয়াজ।
আদর্শ হবে শুধুই ইসলাম...
আহ্বান করে প্রতিদিন।
জামাআতে ইসলামী......।।


মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

পদ

পদ
তরিকুল ইসলাম খালাসী
 মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

যে পদ পাওয়ার আশায়
করছো জুলুম আজ,
অক্ষরে অক্ষরে থাকবে লেখা —
শোনো, তুমিই জুলুমবাজ।

তোমার মতো কত শত
দেখেছি জুলুমকারী,
সময় ফুরালেই যেতে হয়েছে —
এক সেকেন্ড হয়নি দেরি।

তুমি অর্জন করেছ খ্যাতি —
জুলুম করে, মাস্তান,
তোমার আচরণে হাসে
বড় ইবলিশ শয়তান।

ভক্তি-শ্রদ্ধা তোমার কাছে
পাইনি কখনো সম্মান,
দেশ ও দশে জেনেছে তোমায় —
বেইমান, তুমিই বেইমান।।

অর্থ/ব্যাখ্যা:

এই কবিতায় কবি কঠোর সমালোচনা করেছেন সেইসব মানুষের, যারা কেবল পদ ও ক্ষমতা পাওয়ার জন্য অন্যায়, জুলুম ও সন্ত্রাস চালায়। কবি বোঝাতে চেয়েছেন—ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, অন্যায়ের ফল একদিন ভোগ করতেই হয়।

প্রথম স্তবক:
“যে পদ পাওয়ার আশায় করছো জুলুম আজ,
অক্ষরে অক্ষরে থাকবে লেখা — শোনো, তুমিই জুলুমবাজ।”
👉 কবি বলছেন, যারা পদ বা ক্ষমতার লোভে অন্যায় করে, ইতিহাসে তারা চিরকাল জুলুমবাজ নামেই পরিচিত হবে।

দ্বিতীয় স্তবক:
“তোমার মতো কত শত দেখেছি জুলুমকারী,
সময় ফুরালেই যেতে হয়েছে — এক সেকেন্ড হয়নি দেরি।”
👉 অন্যায়কারীরা অনেক এসেছে, আবার সময়ের সঙ্গে সরে গিয়েছে। ক্ষমতা কারো কাছে স্থায়ী হয় না, এক মুহূর্তেই সব হারিয়ে যায়।

তৃতীয় স্তবক:
“তুমি অর্জন করেছ খ্যাতি — জুলুম করে, মাস্তান,
তোমার আচরণে হাসে বড় ইবলিশ শয়তান।”
👉 যারা জুলুম করে নাম কামায়, তারা প্রকৃতপক্ষে শয়তানেরই সঙ্গী। তাদের খ্যাতি গৌরবময় নয়, বরং লজ্জাজনক।

চতুর্থ স্তবক:
“ভক্তি-শ্রদ্ধা তোমার কাছে পাইনি কখনো সম্মান,
দেশ ও দশে জেনেছে তোমায় — বেইমান, তুমিই বেইমান।।
👉 ক্ষমতার জোরে মানুষকে দমন করলেও শ্রদ্ধা অর্জন করা যায় না। শেষ পর্যন্ত দেশ ও জনগণ জানে—তুমি বিশ্বাসঘাতক, বেইমান ছাড়া আর কিছু নও।

---

👉 সারকথা:
কবিতাটি একটি অন্যায়-বিদ্বেষী প্রতিবাদী কবিতা। এটি বোঝাচ্ছে—অন্যায় করে, জুলুম চালিয়ে, মাস্তানি দেখিয়ে কেউ চিরকাল টিকে থাকতে পারে না। প্রকৃত সম্মান আসে ন্যায় ও সত্যের পথে চলার মাধ্যমে, জুলুমের পথে নয়।

সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

ধার ধরি না

ধার ধরি না
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

আমি তোমাকে ধার ধরি না
দেখাও যতই ভয়,
জেনে রেখো — সত্য সত্যই থাকে,
দেখেছি বাতিলের পরাজয়।

তুমি করো চাঁদাবাজি, বোমাবাজি,
দশের থেকে নাও ছিনিয়ে,
শুনে রাখো — সময় কথা বলে
হকের উপর দাঁড়িয়ে।

বলো, আর কতদিন!
পেঁচায় পেঁচায়ে দিন কাটাবে?
হাজারো মানুষের অভিশাপ তোমার
হয়তো কপালেই জুটবে।

তাই এখনো সময় আছে!
ফিরে এসো সত্য পথে,
অবুঝ মনটাকে বাধ্য করো
স্রষ্টাকে মেনে নিতে।। 


অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি অন্যায়, সন্ত্রাস ও ভয়–প্রদর্শনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেছেন যে সত্যের উপর দাঁড়ানো মানুষকে কখনোই ভয় দেখানো যায় না। অন্যদিকে, অন্যায়কারীরা যতই শক্তিশালী হোক, শেষপর্যন্ত সময়ই প্রমাণ করে সত্যের বিজয়।
---
প্রথম স্তবক:
“আমি তোমাকে ধার ধরি না
দেখাও যতই ভয়,
জেনে রেখো — সত্য সত্যই থাকে,
দেখেছি বাতিলের পরাজয়।”
👉 কবি বলছেন—অন্যায়কারীর ভয় দেখানোতে তিনি ভীত নন। কারণ সত্য অটল থাকে, আর মিথ্যা (বাতিল) শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“তুমি করো চাঁদাবাজি, বোমাবাজি,
দশের থেকে নাও ছিনিয়ে,
শুনে রাখো — সময় কথা বলে
হকের উপর দাঁড়িয়ে।”
👉 এখানে অন্যায়কারীদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে—চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ছিনতাই ইত্যাদি। কিন্তু কবি মনে করিয়ে দেন, সময়ই প্রমাণ করে কে সঠিক। সত্য (হক)–এর উপর দাঁড়ানো মানুষই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“বলো, আর কতদিন!
পেঁচায় পেঁচায়ে দিন কাটাবে?
হাজারো মানুষের অভিশাপ তোমার
হয়তো কপালেই জুটবে।”
👉 কবি প্রশ্ন রাখছেন—ছলচাতুরী ও অন্যায় করে আর কতদিন বাঁচবে? মানুষের অভিশাপ একদিন অন্যায়কারীর সর্বনাশ ডেকে আনবেই।
---
চতুর্থ স্তবক:
“তাই এখনো সময় আছে!
ফিরে এসো সত্য পথে,
অবুঝ মনটাকে বাধ্য করো
স্রষ্টাকে মেনে নিতে।। ”
👉 কবি সতর্কবার্তা দিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন—এখনো সুযোগ আছে। অন্যায় থেকে ফিরে এসে সত্য ও স্রষ্টার পথে চলতে হবে। জেদি মনকে সংযত করে আল্লাহ/স্রষ্টাকে মেনে নিতে হবে।

---

👉 সারকথা: কবিতাটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কবিতা। কবি বলেছেন—ভয় দেখানো, সন্ত্রাস, ছলচাতুরী কোনোটাই সত্যকে হারাতে পারে না। অন্যায়কারীর জন্য মানুষের অভিশাপ অনিবার্য। তাই সময় থাকতে সত্য ও স্রষ্টার পথে ফিরে আসাই মুক্তির একমাত্র উপায়।

শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

রাত

রাত
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

রাত নেমে এলে নিঃশব্দে,
যদি ভয় পায় পাপী মন,
পাপ ছেড়ে পূর্ণেতে ভরো
নতুন করে এই জীবন।

চোখের জলে বলো হে রব,
আমি আর করবো না ভুল,
সত্য পথেই থাকবো সদা —
আমার তওবা করো কবুল।

তিনি দেখেন এবং শোনেন
আমাদের এই মনের কথা,
আমরাই ভাবি না শুধু
নষ্ট করি সময় অযথা।

এসো, আর নয় সময় নষ্ট —
আলো পাবো আঁধার শেষে,
রবের পথে ফিরলে সাথী
ক্ষমা পাবো ভালোবেসে।

রাতের বুকে আশা নিয়ে
সাফ করো অন্তরের কালো,
রবের প্রেমেই জ্বলুক সদা —
জীবনের এই আলো।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি রাতকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছেন—যেখানে নিস্তব্ধতা মানুষকে নিজের ভুল–ত্রুটি নিয়ে ভাবতে সাহায্য করে। কবি বলেছেন, রাতের অন্ধকারে পাপী মন ভয় পেলে উচিত নতুন জীবন শুরু করা, তওবা করে রবের পথে ফিরে আসা। কারণ আল্লাহ সব শোনেন–দেখেন এবং ক্ষমাশীল। কবি আহ্বান করেছেন—অযথা সময় নষ্ট না করে রবের প্রেমে জীবন আলোকিত করতে হবে। 

---

প্রথম স্তবক:
“রাত নেমে এলে নিঃশব্দে,
যদি ভয় পায় পাপী মন,
পাপ ছেড়ে পূর্ণেতে ভরো
নতুন করে এই জীবন।”
👉 এখানে রাতের নীরবতাকে আত্মসমালোচনার সময় হিসেবে দেখানো হয়েছে। যদি ভেতরের মন ভয় পায়, তবে পাপ ত্যাগ করে নতুনভাবে জীবন সাজাতে হবে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“চোখের জলে বলো হে রব,
আমি আর করবো না ভুল,
সত্য পথেই থাকবো সদা —
আমার তওবা করো কবুল।”
👉 কবি বলছেন—তওবার মাধ্যমে রবের কাছে ফিরে আসতে হবে। চোখের জল দিয়ে বলতে হবে—আগে ভুল করেছি, আর করবো না। কেবল সত্যের পথেই চলবো, এবং সেই তওবা যেন রব কবুল করেন।
---
তৃতীয় স্তবক:
“তিনি দেখেন এবং শোনেন
আমাদের এই মনের কথা,
আমরাই ভাবি না শুধু
নষ্ট করি সময় অযথা।”
👉 আল্লাহ সব দেখেন ও শোনেন। মানুষের অন্তরের কথাও তিনি জানেন। কিন্তু মানুষ প্রায়ই এ নিয়ে ভাবে না, বরং অযথাই সময় নষ্ট করে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“এসো, আর নয় সময় নষ্ট —
আলো পাবো আঁধার শেষে,
রবের পথে ফিরলে সাথী
ক্ষমা পাবো ভালোবেসে।”
👉 কবি আহ্বান করছেন—অযথা সময় নষ্ট না করে এখনই রবের পথে ফিরতে হবে। কারণ অন্ধকার শেষে আলো আসে। রবের দিকে ফিরলে ভালোবেসেই তাঁর কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়া যাবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“রাতের বুকে আশা নিয়ে
সাফ করো অন্তরের কালো,
রবের প্রেমেই জ্বলুক সদা —
জীবনের এই আলো।। ”
👉 শেষ স্তবকে কবি বলছেন—রাত হোক নতুন আশার সূচনা। অন্তরের কালো মুছে ফেলতে হবে। রবের প্রেমেই জীবনের আলো জ্বলুক সদা।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতায় মূল শিক্ষা হলো—পাপের অন্ধকার থেকে ফিরে এসে তওবা করতে হবে, রবের পথে চলতে হবে। রাতের নিস্তব্ধতা যেন মানুষকে আত্মসমালোচনার সুযোগ দেয়, যাতে ভোরবেলা নতুন করে আলোর পথে জীবন শুরু করা যায়।


মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫

খারাপ কিছু

খারাপ কিছু 
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

খারাপ কিছু যদি না দেখো,
বলো না তা মিথ্যে করে,
শোনা কথায় মন ভাসালে
মাথা কেবল ব্যথায় ভরে।

নিজে দেখো, বুঝে বলো,
চলো সদা সত্য পথে,
অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে
যেও না যে ভুল সিদ্ধান্তে।

নয়তো সদা পস্তাবে তুমি
ভাঙবে শুধু এই হৃদয়,
ভালোর সাথে সঙ্গ দিয়ে
ছিনিয়ে নাও তোমার বিজয়।। 


অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি সমাজের এক সাধারণ ভুলের দিকে আলোকপাত করেছেন—অন্যের সম্পর্কে যাচাই না করেই শুনে নেওয়া কথা বিশ্বাস করা এবং মিথ্যা রটানো। কবি উপদেশ দিচ্ছেন যে, সত্য নিজ চোখে দেখে–বুঝে কথা বলতে হবে, অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্তে না পৌঁছাতে হবে। নইলে অনুশোচনাই জীবন ভর ভুগতে হবে। সত্য–ভালোকে সঙ্গ নিলে তবেই বিজয় মিলবে।

---
প্রথম স্তবক:
“খারাপ কিছু যদি না দেখো,
বলো না তা মিথ্যে করে,
শোনা কথায় মন ভাসালে
মাথা কেবল ব্যথায় ভরে।”
👉 কবি বলছেন—নিজে না দেখে বা যাচাই না করে অন্যের সম্পর্কে মন্দ কথা বলা অন্যায়। কেবল শোনা কথায় মন ভাসালে শেষে কষ্ট আর সমস্যাই ডেকে আনে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“নিজে দেখো, বুঝে বলো,
চলো সদা সত্য পথে,
অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে
যেও না যে ভুল সিদ্ধান্তে।”
👉 শিক্ষা হলো—নিজে যাচাই করে সত্য বুঝে কথা বলতে হবে। সত্যের পথে চলাই সঠিক। অন্যের দোষ খুঁজতে গিয়ে যদি অন্ধভাবে কিছু মেনে নেওয়া হয়, তবে ভুল সিদ্ধান্তে পৌঁছানো অবশ্যম্ভাবী।
---
তৃতীয় স্তবক:
“নয়তো সদা পস্তাবে তুমি
ভাঙবে শুধু এই হৃদয়,
ভালোর সাথে সঙ্গ দিয়ে
ছিনিয়ে নাও তোমার বিজয়।। ”
👉 সতর্কবার্তা: যাচাই না করে অন্যায় করলে পরে অনুশোচনা ছাড়া কিছুই থাকবে না। হৃদয় ভাঙবে, মন কষ্ট পাবে। তাই সত্য ও ভালো মানুষের সঙ্গে সঙ্গ দিতে হবে—তবেই জীবনে বিজয় অর্জন সম্ভব।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতা মানুষের জন্য একটি নৈতিক শিক্ষা—যাচাই না করে অন্যের সম্পর্কে খারাপ বলা বা শোনা কথায় ভেসে যাওয়া উচিত নয়। সত্যকে আঁকড়ে ধরে চললে এবং ভালো মানুষের সঙ্গ নিলে তবেই জীবনে শান্তি ও সাফল্য আসবে।

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

সহনশীলতা

সহনশীলতা
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

সবর করা বড় গুণ
থাকে যার মনে,
তার চোখেই শান্তি ধারা
নামে প্রতিক্ষণে।

রাগে মন ফোঁসে যদি
থাকো চুপ করে,
জয়ী হয় সেই মানুষ
যে রবের ভরসা করে।

গালি যদি কেউ দেয়
বলো না কিছু তার,
ক্ষমার চোখে দখলে তুমি
পাবেই সঠিক বিচার।

রব নিজেই ন্যায়বিচারক,
তিনিই দেখেন সব, 
ফুরিয়ে যাবে অন্যায়ের দিন 
দিতেই হবে হিসাব ।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি সহনশীলতা ও ধৈর্যের গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। রাগ, গালি বা অন্যায়ের মুখোমুখি হলেও ধৈর্য ধরে আল্লাহর ভরসা করলে সফলতা ও সঠিক বিচার মিলবেই। মূল শিক্ষা হলো—ক্ষমাশীলতা ও সহনশীলতা মানুষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ।
---
প্রথম স্তবক:
“সবর করা বড় গুণ
থাকে যার মনে,
তার চোখেই শান্তি ধারা
নামে প্রতিক্ষণে।”
👉 ধৈর্য (সবর) মানুষের বড় গুণ। যার মনে ধৈর্য থাকে, তার জীবন শান্তিতে ভরে ওঠে, তার চোখে নেমে আসে প্রশান্তির ধারা।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“রাগে মন ফোঁসে যদি
থাকো চুপ করে,
জয়ী হয় সেই মানুষ
যে রবের ভরসা করে।”
👉 রাগ উঠলেও চুপ থাকা উত্তম। যে মানুষ রাগ সংবরণ করে এবং আল্লাহর ভরসা রাখে, সেই-ই প্রকৃত বিজয়ী হয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“গালি যদি কেউ দেয়
বলো না কিছু তার,
ক্ষমার চোখে দখলে তুমি
পাবেই সঠিক বিচার।”
👉 কেউ গালি দিলে তার জবাবে গালি দেওয়া নয়, বরং চুপ থাকা ও ক্ষমা করাই শ্রেষ্ঠ কাজ। ক্ষমাশীলতার মাধ্যমেই একদিন আল্লাহর কাছ থেকে সঠিক বিচার মিলবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“রব নিজেই ন্যায়বিচারক,
তিনিই দেখেন সব,
ফুরিয়ে যাবে অন্যায়ের দিন
দিতেই হবে হিসাব।। ”
👉 আল্লাহই প্রকৃত ন্যায়বিচারক। তিনি সব দেখেন ও জানেন। অন্যায়কারী যতদিনই অন্যায় করুক, একদিন তার দিন শেষ হবে এবং তাকে হিসাব দিতেই হবে।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—রাগ, গালি ও অন্যায়ের মুখেও ধৈর্য ও সহনশীলতা বজায় রাখা উচিত। আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে প্রকৃত বিচার ও শান্তি অবশ্যই মিলবে।




শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫

জীবন

জীবন

✍️ তরিকুল ইসলাম খালাসী 
 মধ্যবেনা, বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

জীবন তোমার রবের দেওয়া
অশেষ নিয়ামত,
সত্য পথে চললে তিনি
দেয় বরকত।

মিথ্যার পথে গেলে পাবে
ভ্রান্তি আর ক্ষয়,
রবের থেকে মুখ ফেরালে
নাই কারো আশ্রয়।

দুনিয়াটা এক পরীক্ষাগার,
কেটে যাবে দিন,
নেক আমলেই পার হবে
রেখো না তাই ঋণ।

তাওবা করে ফিরো পথে
নয় বেশি সময়,
সুযোগ মতো নাও চেয়ে
নিরব রাতে সেজদায়।

জীবন যেন যায় না বৃথা,
করো কিছু দান,
চলো তুমি সেই পথ ধরে—
যেখানে রহে ঈমান।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি মানুষের জীবনকে আল্লাহর দান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন—সত্য পথে চললে জীবন বরকতময় হয়, আর মিথ্যার পথে গেলে ক্ষতি ছাড়া কিছুই নেই। দুনিয়া হলো ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষা, যেখানে নেক আমল করাই মুক্তির উপায়। তাই সুযোগ থাকতে তওবা করতে হবে, দান–খয়রাত করতে হবে এবং ঈমানের পথে চলতে হবে—যেন জীবন বৃথা না যায়।

---
প্রথম স্তবক:
“জীবন তোমার রবের দেওয়া
অশেষ নিয়ামত,
সত্য পথে চললে তিনি
দেয় বরকত।”
👉 জীবন হলো আল্লাহর দেয়া এক অমূল্য নিয়ামত। যদি সত্য পথে চলা যায়, তবে আল্লাহর রহমত ও বরকত নেমে আসে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“মিথ্যার পথে গেলে পাবে
ভ্রান্তি আর ক্ষয়,
রবের থেকে মুখ ফেরালে
নাই কারো আশ্রয়।”
👉 যদি মিথ্যার পথে যাওয়া হয়, তবে তা ধ্বংস ও ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে কারো আশ্রয় পাওয়া সম্ভব নয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“দুনিয়াটা এক পরীক্ষাগার,
কেটে যাবে দিন,
নেক আমলেই পার হবে
রেখো না তাই ঋণ।”
👉 দুনিয়া হলো ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষা কেন্দ্র। একদিন এই জীবন শেষ হবে। তাই নেক আমলই মুক্তির একমাত্র পথ। পাপের ঋণ জমিয়ে রাখা উচিত নয়।
---
চতুর্থ স্তবক:
“তাওবা করে ফিরো পথে
নয় বেশি সময়,
সুযোগ মতো নাও চেয়ে
নিরব রাতে সেজদায়।”
👉 দেরি না করে তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরতে হবে। কারণ সময় সীমিত। রাতের নিরব মুহূর্তে সেজদায় কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“জীবন যেন যায় না বৃথা,
করো কিছু দান,
চলো তুমি সেই পথ ধরে—
যেখানে রহে ঈমান।। ”
👉 কবি উপদেশ দিচ্ছেন—জীবন বৃথা যেন না যায়। আল্লাহর পথে দান-খয়রাত করতে হবে এবং সেই পথেই চলতে হবে যেখানে ঈমান টিকে থাকে।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতায় কবি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—জীবন হলো রবের দেয়া একটি অমূল্য সুযোগ। এই জীবনের উদ্দেশ্য হলো সত্য পথে চলা, নেক আমল করা, তওবা ও দান-খয়রাতের মাধ্যমে ঈমানকে অটুট রাখা। তাহলেই জীবন হবে সফল, অন্যথায় তা বৃথা হয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫

শুভাকাঙ্ক্ষী

শুভাকাঙ্ক্ষী
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

তোমার আমার শুভাকাঙ্ক্ষী
আছে অনেক ভাই,
তাদের ভালোবাসা পেয়ে
হৃদয় ভরে যায়।

কারো সাথে পথ চলেছি
ভালোবাসার টানে,
কারো চোখে মমতা ছিল
নিঃস্বার্থ প্রাণখানে।

তারা সবাই থাকলে দূরেও
ভোলে না এই মন,
তারাই আমার আপন,
তারাই প্রিয় জন।

তাদের তরেই দোয়া করি
নীরব রাতে উঠে,
রব, তুমি হেফাজত করো,
চাই না পাপের ছিঁটে।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি তার জীবনের প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষীদের কথা বলেছেন। যারা তাকে ভালোবাসে, পাশে থেকেছে কিংবা দূরে থেকেও আন্তরিক স্নেহ দিয়েছে—তারা-ই তার আসল আপনজন। কবি তাদের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং আল্লাহর কাছে তাদের হেফাজত প্রার্থনা করেছেন।

---
প্রথম স্তবক:
“তোমার আমার শুভাকাঙ্ক্ষী
আছে অনেক ভাই,
তাদের ভালোবাসা পেয়ে
হৃদয় ভরে যায়।”
👉 কবি জানাচ্ছেন, আমাদের জীবনে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী থাকে। তাদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় হৃদয় ভরে ওঠে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“কারো সাথে পথ চলেছি
ভালোবাসার টানে,
কারো চোখে মমতা ছিল
নিঃস্বার্থ প্রাণখানে।”
👉 কেউ ভালোবাসার সম্পর্কে কাছে এসেছে, কেউ বা নিঃস্বার্থ মমতা দেখিয়েছে। এভাবেই শুভাকাঙ্ক্ষীরা জীবনের অংশ হয়ে থাকে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“তারা সবাই থাকলে দূরেও
ভোলে না এই মন,
তারাই আমার আপন,
তারাই প্রিয় জন।”
👉 দূরে থাকলেও তাদের স্মৃতি ও ভালোবাসা ভোলা যায় না। তারাই আসল আপনজন, তারাই প্রকৃত প্রিয়জন।
---
চতুর্থ স্তবক:
“তাদের তরেই দোয়া করি
নীরব রাতে উঠে,
রব, তুমি হেফাজত করো,
চাই না পাপের ছিঁটে।। ”
👉 কবি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন—যেন তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সর্বদা হেফাজতে থাকে, আর কোনো পাপ তাদের ছুঁতে না পারে।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতায় কবি জীবনের প্রকৃত সম্পর্কগুলিকে মূল্যায়ন করেছেন। তিনি শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা ও স্নেহকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে আল্লাহর কাছে তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা করেছেন।

বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

দেখে সবাই একই দৃশ্য,
ভাবনায় নেই মিল,
কারো চোখে স্বপ্ন জ্বলে,
কারো চোখে ঝিলমিল।

কেউ পায় সুখের ইঙ্গিত,
কেউ খোঁজে দোষ,
কেউ বোঝে হৃদয়বাণী,
কারো জ্বলে আফসোস।

ঘৃণার চোখে দেখলে সবই
লাগে কেবল কালো,
ভালোবাসার চোখে দেখো—
পাবে আশার আলো।

হিংসা খোঁজে অপবাদে,
ভালোবাসা চায় মন,
দৃষ্টিভঙ্গি বদলালেই
বদলে যায় জীবন।

তাই তো ভাবনা শুদ্ধ করো,
খুলে দাও অন্তর,
নিজের চোখেই বদলে যাবে
এই পৃথিবীর ঘর।।

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি দেখিয়েছেন যে একই জিনিস মানুষ ভিন্ন ভিন্ন চোখে দেখে। যার দৃষ্টিভঙ্গি যেমন, তার মনে প্রতিফলনও তেমন। কেউ ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীকে দেখে আশা খুঁজে পায়, আবার কেউ ঘৃণা ও হিংসার কারণে শুধু অন্ধকার দেখে। তাই কবি আহ্বান জানিয়েছেন—মনকে শুদ্ধ করো, দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাও; তাহলেই জীবন ও পৃথিবী বদলে যাবে।

---
প্রথম স্তবক:
“দেখে সবাই একই দৃশ্য,
ভাবনায় নেই মিল,
কারো চোখে স্বপ্ন জ্বলে,
কারো চোখে ঝিলমিল।”
👉 মানুষ সবাই একই জিনিস দেখে, কিন্তু ভাবনার ভিন্নতার কারণে অনুভূতি আলাদা হয়। কেউ আশা দেখে, কেউ আনন্দ খুঁজে পায়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“কেউ পায় সুখের ইঙ্গিত,
কেউ খোঁজে দোষ,
কেউ বোঝে হৃদয়বাণী,
কারো জ্বলে আফসোস।”
👉 কেউ সুখ ও ইতিবাচকতা খুঁজে পায়, কেউ আবার শুধু দোষ খোঁজে। কেউ অন্তরের বার্তা বোঝে, আবার কারো মনে আফসোস জ্বলে।
---
তৃতীয় স্তবক:
“ঘৃণার চোখে দেখলে সবই
লাগে কেবল কালো,
ভালোবাসার চোখে দেখো—
পাবে আশার আলো।”
👉 ঘৃণা দিয়ে দেখলে সব কিছু অন্ধকার লাগে। কিন্তু ভালোবাসার চোখে পৃথিবী আলো আর আশায় ভরে ওঠে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“হিংসা খোঁজে অপবাদে,
ভালোবাসা চায় মন,
দৃষ্টিভঙ্গি বদলালেই
বদলে যায় জীবন।”
👉 হিংসা শুধু অন্যায় আর অপবাদ খুঁজে, কিন্তু ভালোবাসা মন খোঁজে। আর যদি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো যায়, তবে জীবনই বদলে যায়।
---
পঞ্চম স্তবক:
“তাই তো ভাবনা শুদ্ধ করো,
খুলে দাও অন্তর,
নিজের চোখেই বদলে যাবে
এই পৃথিবীর ঘর।। ”
👉 কবি উপদেশ দিচ্ছেন—ভাবনা পরিষ্কার করো, হৃদয় খুলো। দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে তোমার চোখেই পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠবে।

---

👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—পৃথিবীকে যেমনভাবে দেখা হয়, সেটাই আমাদের মনে প্রতিফলিত হয়। তাই দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হলে জীবনও সুন্দর হয়।

মনের জং

মনের জং
তরিকুল ইসলাম খালাসী 
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা)

মনে যদি জং ধরে যায়
হৃদয় হবে কালো,
কেমন করে রাখবে তুমি
মনটাকে ভালো?

অভিমান আর হিংসার তোমার
হৃদয় কুরে খায়,
দুঃখে ভরে মনটা তখন
ভালবাসা মুছে যায়।

অসৎ ভাবনা তোমার আমার
হৃদয় করে ভার,
ভালো স্বপ্ন দেখতে হলে
মন করো পরিষ্কার।

ক্ষমার বাতাসে, মমতার রৌদ্রে
মরিচা করো দূর,
দেখবে তখন জীবন হবে
ভালোবাসায় ভরপুর।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি মানুষের অন্তরের দূষণ বা খারাপ চিন্তার কথা বলেছেন। অভিমান, হিংসা, অসৎ চিন্তা—এসব মনকে মরিচার মতো গ্রাস করে, যার ফলে ভালোবাসা ও শান্তি মুছে যায়। তাই কবি বলেছেন, ক্ষমা ও মমতার আলোয় মনকে শুদ্ধ করতে হবে, তাহলেই জীবন ভরে উঠবে ভালোবাসায়।

---
প্রথম স্তবক:
“মনে যদি জং ধরে যায়
হৃদয় হবে কালো,
কেমন করে রাখবে তুমি
মনটাকে ভালো?”
👉 কবি প্রশ্ন তুলছেন—যদি মন খারাপ চিন্তা আর দূষণে ভরে যায়, তবে হৃদয় অন্ধকার হয়ে যাবে। তখন মনকে ভালো রাখা সম্ভব নয়।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“অভিমান আর হিংসার তোমার
হৃদয় কুরে খায়,
দুঃখে ভরে মনটা তখন
ভালবাসা মুছে যায়।”
👉 অভিমান ও হিংসা মানুষের হৃদয়কে গ্রাস করে। তখন মন দুঃখে ভারী হয়ে যায়, আর ভালোবাসা হারিয়ে যায়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“অসৎ ভাবনা তোমার আমার
হৃদয় করে ভার,
ভালো স্বপ্ন দেখতে হলে
মন করো পরিষ্কার।”
👉 অসৎ চিন্তা মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। কিন্তু ভালো স্বপ্ন দেখতে চাইলে মনকে পরিষ্কার করতে হবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“ক্ষমার বাতাসে, মমতার রৌদ্রে
মরিচা করো দূর,
দেখবে তখন জীবন হবে
ভালোবাসায় ভরপুর।। ”
👉 কবি সমাধান দিচ্ছেন—ক্ষমা ও মমতা হলো সেই শক্তি, যা মনের মরিচা দূর করতে পারে। যখন মন পরিষ্কার হবে, তখন জীবন ভরে উঠবে ভালোবাসায়।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—অভিমান, হিংসা ও অসৎ চিন্তা দূর করে ক্ষমা ও মমতার মাধ্যমে মনকে শুদ্ধ করলে জীবন শান্তি ও ভালোবাসায় ভরে উঠবে।


মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫

ব্যক্তিত্ব

ব্যক্তিত্ব 
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

নিজস্বতা হারিয়ে গেলে
হারিয়ে যাবে সুখ,
পদে পদে ভাঙবে তখন
আশা ভরা বুক।

সাহস রেখে রাখো তুমি
ওদের চোখে চোখ,
ওরা জানুক তুমি সদা
সত্য পথের লোক।

ভিড়ের মাঝে গা ভাসালে
পাল্টে যাবে রঙ,
তোমার হারিয়ে যাবে ব্যক্তিত্ব
পড়বে শুধুই জং।

চলনে তাই থাক দৃঢ়তা,
বলনেও হোক বাঁধন,
ভিতর যত থাকবে সৎ
হবে ফুলের মতন। 

চেহারাতে যায় না চেনা 
ভেতরের ওই মন, 
ব্যক্তিত্ব গড়তে হলে 
আগে গড়ো এই জীবন ।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি ব্যক্তিত্বের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন—নিজস্বতা, সাহস, সত্যের প্রতি অটলতা, সৎ জীবনযাপন—এসবই ব্যক্তিত্ব গঠনের মূল উপাদান। বাহ্যিক চেহারার চেয়ে ভেতরের গুণই আসল পরিচয়।

---
প্রথম স্তবক:
“নিজস্বতা হারিয়ে গেলে
হারিয়ে যাবে সুখ,
পদে পদে ভাঙবে তখন
আশা ভরা বুক।”
👉 মানুষ যদি নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে, তবে সুখও হারিয়ে যায়। আশা ও আত্মবিশ্বাস ভেঙে পড়ে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“সাহস রেখে রাখো তুমি
ওদের চোখে চোখ,
ওরা জানুক তুমি সদা
সত্য পথের লোক।”
👉 ব্যক্তিত্ববান হতে হলে সত্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে। সাহস নিয়ে চোখে চোখ রেখে দাঁড়াতে হবে, যাতে মানুষ বোঝে—তুমি সত্যের পথে চলা একজন সৎ মানুষ।
---
তৃতীয় স্তবক:
“ভিড়ের মাঝে গা ভাসালে
পাল্টে যাবে রঙ,
তোমার হারিয়ে যাবে ব্যক্তিত্ব
পড়বে শুধুই জং।”
👉 ভিড়ের সঙ্গে ভেসে গেলে নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে যাবে। তখন তোমার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে, আর জীবনে মরিচা ধরবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“চলনে তাই থাক দৃঢ়তা,
বলনেও হোক বাঁধন,
ভিতর যত থাকবে সৎ
হবে ফুলের মতন।”
👉 তোমার আচরণে দৃঢ়তা থাকতে হবে, কথাতেও শৃঙ্খলা। অন্তরে সততা থাকলে জীবন ফুলের মতো সুন্দর হয়ে উঠবে।
---
পঞ্চম স্তবক:
“চেহারাতে যায় না চেনা
ভেতরের ওই মন,
ব্যক্তিত্ব গড়তে হলে
আগে গড়ো এই জীবন ।।”
👉 আসল ব্যক্তিত্ব চেহারায় নয়, হৃদয় ও জীবনের ভেতরে। তাই ব্যক্তিত্ব গড়তে হলে প্রথমে সৎ ও নৈতিক জীবন গড়তে হবে।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—সাহস, সত্যবাদিতা, সততা ও স্বকীয়তা ব্যক্তিত্বের আসল শক্তি। বাহ্যিক চেহারার নয়, বরং ভেতরের জীবনযাপনেই ব্যক্তিত্বের ভিত্তি গড়ে ওঠে।





ভদ্রতা

ভদ্রতা
তরিকুল ইসলাম খালাসী
মধ্যবেনা বাদুড়িয়া (উত্তর ২৪ পরগনা) 

ভদ্র ভাষায় কথা বলো,
গলে যাবে মন,
দূরের মানুষ বিভেদ ভুলে
হবে আপনজন।

নম্র আচরণে জয় করা যায়
হৃদয়ের রাজত্ব,
এই অহংকারে হারায় মানুষ
আপন ব্যক্তিত্ব।

কঠিন দিনেও হাসিমুখে
দিও তুমি বিদায়,
দেখবে তখন তোমার তরে
ওরাই দেবে হৃদয়।

এই দয়া, মায়া, ভালোবাসা —
ভদ্রতারই চিহ্ন,
এ সব কিছুই রব দিয়েছেন
মানুষেরই জন্য।। 

অর্থ/ব্যাখ্যা: 

এই কবিতায় কবি ভদ্রতার মাহাত্ম্য তুলে ধরেছেন। ভদ্রতা মানুষকে একে অপরের কাছাকাছি আনে, সম্পর্ককে দৃঢ় করে। নম্রতা, ভালোবাসা, দয়া—এসব গুণই মানুষকে প্রকৃত অর্থে সুন্দর করে তোলে।

---
প্রথম স্তবক:
“ভদ্র ভাষায় কথা বলো,
গলে যাবে মন,
দূরের মানুষ বিভেদ ভুলে
হবে আপনজন।”
👉 ভদ্রভাবে কথা বললে কঠিন মনও নরম হয়ে যায়। ভদ্রতা মানুষের দূরত্ব ঘোচায়, অপরিচিতকেও আপন করে তোলে।
---
দ্বিতীয় স্তবক:
“নম্র আচরণে জয় করা যায়
হৃদয়ের রাজত্ব,
এই অহংকারে হারায় মানুষ
আপন ব্যক্তিত্ব।”
👉 নম্রতা দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করা যায়। কিন্তু অহংকার মানুষের ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করে দেয়।
---
তৃতীয় স্তবক:
“কঠিন দিনেও হাসিমুখে
দিও তুমি বিদায়,
দেখবে তখন তোমার তরে
ওরাই দেবে হৃদয়।”
👉 জীবনের কষ্টেও যদি ভদ্রতা আর হাসিমুখ বজায় রাখা যায়, তবে মানুষ তোমাকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসবে।
---
চতুর্থ স্তবক:
“এই দয়া, মায়া, ভালোবাসা —
ভদ্রতারই চিহ্ন,
এ সব কিছুই রব দিয়েছেন
মানুষেরই জন্য।। ”
👉 দয়া, মায়া ও ভালোবাসা ভদ্রতার প্রধান লক্ষণ। এগুলো স্রষ্টার দান, যা মানুষের জীবনে সৌন্দর্য যোগ করে।

---
👉 সারকথা:
এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো—ভদ্রতা ও নম্রতা মানুষের আসল সৌন্দর্য। ভদ্র ব্যবহারে মন জয় হয়, সম্পর্ক দৃঢ় হয়, আর অহংকার শুধু মানুষকে একা করে দেয়।